বিশ্ব

ট্রাম্পের শপথের পরই কোয়াড বৈঠকের প্রস্তুতি: চিনের উদ্দেশে বার্তা দেওয়ার পরিকল্পনা

ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরের দিন, অর্থাৎ ২১ জানুয়ারি, ওয়াশিংটনে কোয়াডভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর বিদেশমন্ত্রীরা একটি বৈঠক করার উদ্যোগ নিয়েছে। জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রস্তাবিত এই বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকেও সমর্থন রয়েছে। শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর, অস্ট্রেলিয়ার পেনি ওয়াং, জাপানের তাকেশি আইওয়া, এবং আমেরিকার নতুন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও। তবে এই বৈঠকটি আনুষ্ঠানিক নয়, বরং ঘরোয়া বৈঠকের মতোই হবে, কারণ সেনেট থেকে মার্কো রুবিওর পদে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন এখনও বাকি।

চিনের জন্য বার্তা

কূটনৈতিক মহল মনে করছে, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে কোয়াডের বৈঠক আয়োজন করে চিনের উদ্দেশে একটি শক্তিশালী বার্তা দেওয়া হবে। পূর্বতন বাইডেন প্রশাসনের নীতি অনুসরণ করবেন কি না, বা কোন নীতি বাদ দেবেন, তা নিয়ে কোয়াড সদস্যদের মধ্যে সংশয় রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্প প্রশাসন চীনের সঙ্গে সরাসরি জি-২ অক্ষ তৈরি করে সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা করতে পারে। এমনটি হলে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের একাধিপত্য এবং দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের সম্প্রসারণবাদী নীতির মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়বে। ট্রাম্পের আগের মেয়াদে দেখা গেছে, তিনি ভূকৌশলগত আদর্শের চেয়ে বাণিজ্য এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।

টোকিওর উদ্যোগ

কোয়াড সদস্যদের মধ্যে জাপান সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনকে কোয়াডের কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য টোকিওর এই প্রচেষ্টা। অন্যদিকে, ভারতের পক্ষ থেকে এই বৈঠক নিয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না আসলেও, বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এস. জয়শঙ্কর ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।

কোয়াড বৈঠকের গুরুত্ব

কোয়াড বা কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়লগ মূলত ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে একটি জোট, যা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কাজ করে। ট্রাম্পের অধীনে এই জোট কীভাবে কাজ করবে, তা নিয়ে সংশয় থাকলেও, প্রথম থেকেই চিনের সম্প্রসারণবাদকে চ্যালেঞ্জ জানানো কোয়াডের মূল লক্ষ্য।

চিনের জন্য চ্যালেঞ্জ

বৈঠকের লক্ষ্য শুধু আঞ্চলিক নিরাপত্তা নয়, বরং ট্রাম্প প্রশাসনকে দ্রুত কোয়াডের কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা। চিনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথের পরদিন কোয়াড বৈঠকের এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। এই বৈঠক কেবল আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যই নয়, বরং ভবিষ্যতে কোয়াড জোটের কার্যক্রম এবং দিক নির্ধারণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Latest News Of Signalbd.com

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button