বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া রোববার (৩১ আগস্ট) রাত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেন। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আগামীকাল সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নিরাপত্তা বজায় রাখতে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
বহিরাগতদের হামলা ও শিক্ষার্থীদের অবস্থান
রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের সামনে বহিরাগতরা লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রবেশ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় নারী শিক্ষার্থীসহ কয়েকজন আহত হন।
এর আগে, কম্বাইন্ড ডিগ্রীর দাবিতে শিক্ষার্থীরা ভিসিসহ একাডেমিক কাউন্সিলের প্রায় ২২৭ শিক্ষককে ক্যাম্পাসে জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের ভিতরে আটকে রাখে এবং গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। শিক্ষকরা দুপুর ১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সেখানে অবরুদ্ধ ছিলেন।
প্রশাসনের পদক্ষেপ ও আলোচনাসভা
ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝতার আলোচনা শুরু করেন। তবে, হঠাৎ করে হামলা চালানোর পর শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হল থেকে বের হয়। এরপর শিক্ষকরা নিরাপদে বের হন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের নির্দেশ দেন এবং নিরাপত্তা বজায় রাখতে বিজিবি মোতায়েন করেন।
শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া
শিক্ষার্থীরা বলেন, তারা যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনরত ছিলেন। তবে হঠাৎ বহিরাগতদের হামলা তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ এবং নিরাপত্তার দিক থেকে সতর্কতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি জানিয়েছিলাম। হঠাৎ বহিরাগতদের হামলা এবং বন্ধ ঘোষণা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক।”
প্রভাব ও ভবিষ্যতের পরিস্থিতি
বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিজিবি মোতায়েন রাখা হলেও ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের আলোচনা ও সমঝতা ছাড়া পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা কঠিন হবে।
এছাড়া, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক, প্রশাসন ও ক্যাম্পাসের সামগ্রিক কার্যক্রমেও প্রভাব ফেলেছে।
পরিশেষে
বাকৃবিতে ঘটিত বহিরাগতদের হামলার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার মাধ্যমে প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, আন্দোলন ও নিরাপত্তার বিষয়গুলো সমাধান না হওয়া পর্যন্ত উত্তেজনা অব্যাহত থাকতে পারে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্থিতিশীল করা সম্ভব। অন্যথায়, ভবিষ্যতে আরও উত্তেজনা দেখা দিতে পারে।
এম আর এম – ১১১৮, Signalbd.com



