আঞ্চলিক

বাবা-মায়ের ভরণপোষণ দেন না রিপন মিয়া, স্ত্রী-সন্তানকে অস্বীকার

Advertisement

দেশের আলোচ্য বিষয়বস্তু কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া–কে (যিনি অধিকাংশেই ‘রিপন ভিডিও’ নামে পরিচিত) ব্যাপক জনপ্রিয়তা প্রাপ্ত হলেও, সাম্প্রতিক এক বিতর্কে দেখা গেছে, তিনি বাবা-মাকে ভরণপোষণ দিচ্ছেন না এবং স্ত্রী-সন্তানকে অস্বীকার করছেন— এমন দাবি করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এই অভিযোগগুলো সামাজিক মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে এবং প্রতিক্রিয়ায় উত্তাল হয়েছে অনলাইন মহল।

অভিযোগ ও পরিবারের বয়ান

সোমবার এক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুসন্ধানে রিপনের মা অভিযোগ করেন যে, “রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে গেছেন, তবে বাবা-মায়ের পরিচয় দেওয়া লজ্জা লাগে।” তার ভাষায়, “ও বাড়ি করেছে, গরিব বাড়ির সন্তান হিসেবে পরিচয় দিতে চাই না।” তিনি আরও জানান, পুরনো ভাঙা বাড়ি ছেড়ে নতুন পাকা বাড়ি বানিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে থাকছেন রিপন।

রিপনের বাবা দাবি করেন, শুরুর দিকে ছেলে তাঁকে সহযোগিতায় ভিডিও বানাত, পরে বাদ দিয়ে অন্য কারো সঙ্গে কাজ শুরু করার ফলে যোগাযোগ কমে গেছে। যদিও পরিবারের দাবি, রিপন ভরণপোষণ দিচ্ছেন না, কিন্তু খোঁজখবর অব্যাহত আছে।

রিপনের বক্তব্য ও প্রতিক্রিয়া

সমালোচনার জবাবে রিপন একটি ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, “যে নারীকে স্ত্রীরূপে বলা হচ্ছে, তিনি আসলে আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রী।” এরপর এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি এখনও বিয়ে করিনি; বিবাহিত সম্পর্ক সৃষ্টির গুজব। মিডিয়া অনুমতি ছাড়াই ঘরে প্রবেশ করেছে।”

এই ধরনের বক্তব্য সামাজিক মিডিয়ায় দ্রুত ভাইরাল হয়ে ওঠে। ইউটিউব, ফেসবুক ও টিকটকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসে পরিবারের দাবি-অভিযোগ এবং রিপনের বক্তব্য।

স্ত্রী ও সন্তান সম্পর্কে অস্বীকার

পরিবারের দাবি, রিপনের স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। মা বলেন, “আমরা কষ্ট করে মানুষ করেছি, সন্তান নিয়ে বাড়ব, পরিচয় দিব।” এমনকি, পরিবারের মহিলারা দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করেছেন ছেলে তাদের পাশে দাঁড়াবার। কিন্তু রিপন তাদের সম্পর্কে অস্বীকার করছেন।

কিছুমাত্র সময় আগে, রিপন পারিবারিকভাবে আয়োজন করা বিবাহের ঘটনা স্বীকার করেছিলেন, কিন্তু সম্প্রতি তার বক্তব্যে সেই বিবাহকে ‘গৃহবধূ সম্পর্ক’ বলায় পরিবারের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

সামাজিক প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক

এই সংবাদ প্রকাশের পর সামাজিক মাধ্যমে দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে জনমত। এক পক্ষ বলছেন, “জানাযাবে আদালত যেখানে—কিছুই গোপন থাকবেনা।” অন্যজন বলছেন, “জনপ্রিয়তা বেশি বাড়লে ব্যক্তি নিজ পরিবার ভুলে যেতে পারেন।”

কিন্তু অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন—সেলিব্রিটি হওয়ার অর্থ কি পারিবারিক দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া? কেউ বলেছেন, “মানুষ যদি জনপ্রিয়তা পায়, তবুও পরিবারকে ভুলে যাওয়ার অধিকার নেই।”

আইনগত ও নৈতিক দৃষ্টিকোণ

আইনগতভাবে, ব্যাক্তিগত জীবনের তথ্য ও পারিবারিক সংবেদনশীল বিষয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া জরুরি। ব্যক্তির সম্মান ও গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার সংবিধানে রয়েছে।

নৈতিকভাবে, পরিবারের সদস্যদের দাবি যদি সত্য হয়, তা সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রশ্ন তোলে। জনপ্রিয়তা অর্জন করেই যদি কেউ পারিবারিক সম্পর্ক ত্যাগ করে, তাহলে জনমত ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধে তা এক বড় ধাক্কা।

জনপ্রিয়তা ও পারিবারিক দায়িত্ব

রিপন মিয়া একজন কনটেন্ট নির্মাতা যিনি হাজার হাজার ফলোয়ার ও ভিউ তৈরি করেছেন। এমন সম্মান ও শ্রোতা থাকবে শুনেই ভাবে তিনি পরিবার থেকে দূরে যেতে পারতেন— এমন ধারণাকে অনেকেই তীক্ষ্ণভাবে সমালোচনা করছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জনপ্রিয়তার সাথে সামাজিক যোগাযোগ ও মনুষ্যিক দায়বদ্ধতা জড়িয়ে থাকে। সফল ব্যক্তির উচিত পারিবারিক সম্পর্ক ক্ষুণ্ন না করে সুনাগরিক জীবন ধারন করা। এই বিতর্ক শুধু একজন কনটেন্ট নির্মাতার ব্যক্তিগত বিষয় নয়— সামাজিক মূল্যবোধ ও পারিবারিক সম্বন্ধের প্রতিফলন।

মান-সম্মানের প্রশ্ন

বর্তমানে রিপন পার্থক্য নির্ধারণে অবস্থান নিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক প্ল্যাটফর্ম তার বক্তব্য ও প্রতিক্রিয়া লক্ষ করছে

পরবর্তী সময়ে পরিবার এবং রিপনের পক্ষ উভয়ের মধ্যে মান-সম্মান ও সত্যতা নিয়ে বিবৃতি ও প্রতিক্রিয়া আসতে পারে।

এদিকে সাধারণ মানুষ ও অনুগত ভক্তরা আশায় রয়েছেন— পরিবারবদ্ধভাবে সমস্যা মীমাংসা হবে কি না। কারণ এই ধরণের অভিযোগ শুধু ব্যক্তির জন্যই নয়, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গার প্রতিফলন।

এম আর এম – ১৭৭৬,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button