বাংলাদেশের বিমান বহর আধুনিকীকরণের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানি থেকে ২৫টি নতুন উড়োজাহাজ কেনার জন্য কার্যাদেশ দিয়েছে সরকার। সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
বাণিজ্য সচিবের বক্তব্য
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান জানান, বোয়িং একটি বেসরকারি কোম্পানি হলেও বিশ্বজুড়ে তাদের বিমান ব্যবহার করা হয়। তিনি বলেন, “বোয়িংয়ের ব্যবসাটা যুক্তরাষ্ট্র সরকার করে না, এটি বোয়িং কোম্পানি করে। আমরা তাদের কাছ থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার জন্য কার্যাদেশ দিয়েছি। ভারত, ভিয়েতনাম এবং ইন্দোনেশিয়াও সম্প্রতি একশ’টি করে বোয়িং উড়োজাহাজ অর্ডার দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, এই উড়োজাহাজগুলো সরবরাহের ক্ষেত্রে বোয়িং কোম্পানির সময় লাগবে, কারণ তারা তাদের উৎপাদন ক্ষমতা অনুযায়ী ক্রেতাদের সরবরাহ করবে।
কেন নতুন উড়োজাহাজ কেনার উদ্যোগ
বিশ্ববাজারে বিমান পরিবহন খাতে প্রতিযোগিতা ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশও চায় এ খাতে নিজেদের সক্ষমতা আরও বাড়াতে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক রুটে গুণগত মানের সেবা ও যাত্রী সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিমান বহরকে আধুনিক ও হালনাগাদ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
নতুন উড়োজাহাজ যুক্ত হলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সংখ্যা বাড়বে এবং যাত্রীদের আরও উন্নত সেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
বাংলাদেশের বিমান বহরের বর্তমান অবস্থা
বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে রয়েছে ১৬২ সিটের ৪টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০, ৪১৯ সিটের ৪টি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর, ৪টি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার এবং ২টি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার এয়ারক্রাফট। নতুন ২৫টি উড়োজাহাজ যুক্ত হলে বহরের সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে যাবে।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট
ভারত, ভিয়েতনাম এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলো ইতিমধ্যে বোয়িং কোম্পানির কাছ থেকে একশ’টির মতো উড়োজাহাজের অর্ডার দিয়েছে। এই দেশগুলো এভিয়েশন খাতে বড় ধরনের বিনিয়োগ করছে। একই পথে হাঁটছে বাংলাদেশও।
বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক যাত্রী চলাচলের চাপ এবং বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতি আনতে এই বিনিয়োগকে সময়োপযোগী বলে মনে করা হচ্ছে।
অর্থনৈতিক প্রভাব
বিমান খাতে বিনিয়োগ দেশের পর্যটন ও রপ্তানি বাণিজ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন উড়োজাহাজ আসার পর বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী পরিবহন আরও বেড়ে যাবে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগও বাড়বে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের মতে, বহর আধুনিকীকরণের এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের বিমান খাতের জন্য ইতিবাচক। তবে তারা সতর্ক করেছেন, শুধু নতুন উড়োজাহাজ কেনাই যথেষ্ট নয়, এয়ারপোর্ট ব্যবস্থাপনা, জনবল প্রশিক্ষণ ও আন্তর্জাতিক মানের সেবা নিশ্চিত করাও জরুরি।
সারসংক্ষেপ
বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত এয়ারক্রাফট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং থেকে ২৫টি আধুনিক উড়োজাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এই তথ্য জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানের বিমান পরিবহন সেবা নিশ্চিত ও বহর সম্প্রসারণের লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং উড়োজাহাজ কেনার এই সিদ্ধান্ত দেশের বিমান খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সরবরাহ প্রক্রিয়া দীর্ঘ হওয়ায় যাত্রীদের এই নতুন উড়োজাহাজের সেবা পেতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।
এম আর এম – ০৫৩৯, Signalbd.com
				
					


