ভোক্তাপর্যায় এলপিজি (লিকুইড প্রোপেন-প্রোপেইন গ্যাস) এবং অটোগ্যাসের দাম নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে। নভেম্বর মাসে প্রতিটি ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১,২৪১ টাকা থেকে কমিয়ে ১,২১৫ টাকা করা হয়েছে। এতে প্রতি সিলিন্ডারে ২৬ টাকার হ্রাস ঘটেছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (BERC) রোববার এই নতুন দাম ঘোষণা করেছে।
নতুন মূল্য ঘোষণা হওয়ার পরই সন্ধ্যা থেকে এটি কার্যকর হবে। একইসাথে অটোগ্যাসের দামও ৫৬ টাকা ৭৭ পয়সা থেকে কমিয়ে ৫৫ টাকা ৫৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আগের মাসের তুলনায় দাম কমেছে
অতীতে অক্টোবর মাসে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ২৯ টাকা কমিয়ে ১,২৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেই সময় অটোগ্যাসের দামও ১ টাকা ৩৮ পয়সা কমানো হয়েছিল। সম্প্রতি ঘোষিত এই হ্রাস আগের মাসের ধারাবাহিকতার অংশ।
বাংলাদেশে গ্যাস সিলিন্ডারের দাম প্রায়ই আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজি দামের ওঠানামা, রিফাইনারি খরচ, এবং পরিবহন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণ করা হয়।
২০২৪ সালের এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম পরিবর্তন
উল্লেখযোগ্য যে, ২০২৪ সালে মোট চার দফা দাম কমানো হয়েছিল এবং সাত দফা দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল। একবার দাম অপরিবর্তিত থেকেছিল।
- জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসে এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল।
- এপ্রিল, মে, জুন এবং নভেম্বর মাসে দাম কমানো হয়েছিল।
- ডিসেম্বরে দাম অপরিবর্তিত ছিল।
এটি স্পষ্ট করে যে, বাংলাদেশের গ্যাস বাজারে দাম নিয়মিতভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে এবং ভোক্তাদের সুবিধার্থে কমিশন দাম সমন্বয় করে থাকে।
এলপিজি ও অটোগ্যাসের বাজার পরিস্থিতি
বাংলাদেশে গ্যাস সিলিন্ডার এবং অটোগ্যাসের ব্যবহার বাড়ছে, বিশেষ করে শহরে। গৃহস্থালি রান্নার জন্য ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডার বেশি ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি যানবাহনের জ্বালানি হিসেবে অটোগ্যাসের চাহিদাও বেশি।
গত বছর আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজি দাম বাড়ার ফলে ভোক্তাদের উপর প্রভাব পড়েছিল। তবে কমিশনের নিয়মিত হ্রাস-উত্তোলনের মাধ্যমে বাজারে স্থিতিশীলতা আনা হচ্ছে।
বাংলাদেশে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণের সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়:
- আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজি মূল্য: গ্লোবাল এলপিজি দামের ওঠানামা সরাসরি দেশের বাজারে প্রভাব ফেলে।
- পরিবহন ও লজিস্টিক খরচ: সিলিন্ডার পরিবহনের খরচ, ডিলিভারি চার্জ প্রভৃতি।
- সরকারি নীতি ও কর: ভ্যাট, শুল্ক, এবং অন্যান্য সরকারি নিয়ম।
ভোক্তাদের সুবিধা ও প্রতিক্রিয়া
নতুন দাম কার্যকর হওয়ার পর বাজারে ভোক্তাদের জন্য কিছুটা স্বস্তির সুযোগ তৈরি হয়েছে। রান্নার খরচ কমে যাওয়া এবং অটোগ্যাসের কম দাম যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
একজন ঢাকার গৃহবধূ বলেছেন, “প্রতিমাসে গ্যাসের দাম ওঠানামা করে, কিন্তু সাম্প্রতিক দাম হ্রাস আমাদের পরিবারে রান্নার খরচ কমাতে সাহায্য করবে। ছোট পরিবারের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
অন্যদিকে অটোরিকশা চালকরা বলছেন, “গ্যাসের দাম কমানোর ফলে দৈনন্দিন যাতায়াতের খরচও কমবে। এতে আমাদের উপার্জনে কিছুটা সুবিধা হবে।”
ভবিষ্যৎ প্রক্ষেপণ
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজি দামের ওঠানামা চলতে পারে। তবে বাংলাদেশে BERC-এর নিয়মিত হ্রাস-উত্তোলন ব্যবস্থা থাকায় ভোক্তারা বড় ধরনের প্রভাব এড়াতে সক্ষম হবেন।
বাংলাদেশে ভোক্তাপর্যায় এলপিজি সরবরাহের ক্ষেত্রে কিছু প্রধান কোম্পানি রয়েছে, যেমন: বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (BPC), LP Gas Limited, Bashundhara LPG, Navana LPG। এই কোম্পানিগুলো সরকারের নিয়মিত নির্দেশনা অনুযায়ী দাম পরিবর্তন করে।
সাধারণ তথ্য: এলপিজি ও অটোগ্যাস
এলপিজি: এলপিজি হলো প্রোপেন এবং বাটেন মিশ্রিত একটি গ্যাস, যা রান্না, তাপ উৎপাদন এবং ছোট শিল্পে ব্যবহৃত হয়।
অটোগ্যাস: গাড়ি ও যানবাহনের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত এলপিজি। এটি পরিবেশবান্ধব জ্বালানি হিসেবে পরিচিত।
MAH – 13599 I Signalbd.com



