বিশ্ব

দিল্লিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩

Advertisement

ভারতের রাজধানী দিল্লির লাল কেল্লার কাছে সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে একটি গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩ জনে পৌঁছেছে, আহত হয়েছেন অন্তত ৩৫ জন। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

দিল্লি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার কারণে দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং জরুরি অবস্থায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

ঘটনার বিবরণ

দিল্লি পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, বিস্ফোরণটি লাল কেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে পার্ক করা একটি গাড়িতে ঘটে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় আশেপাশের তিনটি গাড়িতেও আগুন লাগে। স্থানীয়রা জানান, বিস্ফোরণের শব্দ এতই প্রখর ছিল যে, বহু দূরের মানুষও তা শুনতে পান।

দিল্লি পুলিশ কমিশনার সতীশ গোলচা সাংবাদিকদের বলেন, “গাড়িটিতে যাত্রী ছিলেন এবং ধীরে চলছিল। বিস্ফোরণের কারণে আশপাশের গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।” এছাড়াও, বিস্ফোরণে মোট ২২টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস, এনএসজি এবং ফরেনসিক দল তদন্তে কাজ করছে। আহতদের তড়িঘড়ি চিকিৎসার জন্য নিকটস্থ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সতর্কতা

বিস্ফোরণের পর দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই ও কলকাতাসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর ও জনবহুল এলাকায় চরম সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পরিস্থিতি জানানো হয়েছে। এছাড়া এনআইএ (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি) এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি) তদন্ত শুরু করেছে।

লাল কেল্লা পুরোনো দিল্লির ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত এবং দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ও পর্যটনকেন্দ্র। বছরের পর বছর ধরে এখানে পর্যটকরা আসে। পূর্বে এই এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও মঙ্গলবারের বিস্ফোরণ শঙ্কাজনক প্রমাণ করেছে যে, আরও শক্তিশালী সতর্কতা প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, একই দিনে দিল্লি থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে হরিয়ানার ফরিদাবাদে ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

বিস্ফোরণের পর দিল্লির লাল কেল্লা ও আশেপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় এলাকাটি ত্যাগ করেছে। দুর্ঘটনার কারণে পর্যটন ও স্থানীয় ব্যবসায়িক কার্যক্রমও প্রভাবিত হয়েছে।

পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “আমি এই ভয়াবহ ঘটনায় স্তম্ভিত।” দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও পরিস্থিতি দ্রুত তদন্ত করার দাবি করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের সময় তার চোখের সামনে মানুষ ছিন্নভিন্ন হয়ে রাস্তায় পড়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, “বিস্ফোরণ এত ভয়ঙ্কর ছিল যে, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।”

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আশপাশের ভবনের জানালা ও দরজা কেঁপে উঠেছে। বিস্ফোরণ থেকে ছিন্নভিন্ন মরদেহ ও ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে পড়েছে।

বিশেষজ্ঞ মতামত

সন্ত্রাসবিজ্ঞান ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, রাজধানীর এই ধরনের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা আরও কঠোর করা প্রয়োজন। এক নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, “পর্যটনকেন্দ্র ও জনবহুল এলাকায় সিসিটিভি, র‍্যাডার ও নজরদারি আরও শক্তিশালী করা উচিত।”

এছাড়াও তারা বলেন, দ্রুত তদন্ত না হলে ভবিষ্যতে এমন ভয়াবহ ঘটনা পুনরায় ঘটার আশঙ্কা থাকে।

দিল্লির লাল কেল্লার কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১৩ জনের মৃত্যু এবং ৩৫ জনের আহত হওয়া আন্তর্জাতিক ও দেশীয় পর্যায়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। তদন্ত চলছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের ঘটনা সামলানোর জন্য কার্যকর নিরাপত্তা নীতি ও প্রযুক্তি ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। ভবিষ্যতে জনগণ ও পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে সতর্ক ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

এম আর এম – ২১৭৪,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button