ইটের জবাবে পাটকেল, মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক চীনের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর জবাবে এবার মার্কিন পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছে চীন। আজ মঙ্গলবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আমেরিকার কয়লা ও এলএনজিতে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
চীনের পাল্টা পদক্ষেপ
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানায়, চীন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল, ফার্মের সরঞ্জাম ও গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিও দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, “আমেরিকার একতরফা শুল্ক বৃদ্ধি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। এটি কেবল তাদের নিজেদের সমস্যা সমাধানে ব্যাঘাত ঘটাবে না, বরং চীন ও আমেরিকার মধ্যে স্বাভাবিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”
মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত
এছাড়া, চীন ঘোষণা করেছে যে, তারা মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগলের বিরুদ্ধে অ্যান্টি-ট্রাস্ট লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করবে।
ট্রাম্পের শর্ত
এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মেক্সিকো ও কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ কর আরোপের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। তবে চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। এই সিদ্ধান্ত স্থানীয় সময় মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ট্রাম্প মেক্সিকোকে শর্ত দিয়েছেন যে, তাদের সীমান্তে তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে, যেন অবৈধ মাদক আমেরিকায় প্রবেশ করতে না পারে। সেই শর্ত অনুযায়ী, সীমান্তে ন্যাশনাল গার্ডের ১০ হাজার সেনাকে তাৎক্ষণিকভাবে মোতায়েন করবে মেক্সিকো। এ শর্তে তাদের ওপর আরোপিত ২৫ শতাংশ শুল্কের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন ট্রাম্প।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর আশ্বাস
এদিকে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও ট্রাম্পকে আশ্বস্ত করেছেন যে, তারা সীমান্তে নতুন প্রযুক্তি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করবে। পাশাপাশি ফেন্টানাইল চোরাচালান ও অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমেরিকাকে সহায়তা করবে। স্থানীয় সময় সোমবার এক ফোনালাপে ট্রুডো মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।
ট্রাম্পের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য
শুল্ক আরোপ স্থগিতের পর নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, “প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমেরিকানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমার দায়িত্ব, এবং আমি ঠিক সেটাই করছি। এই প্রাথমিক ফলাফলে আমি খুবই সন্তুষ্ট।”
মার্কিন ও চীনা সরকারের মধ্যে চলমান এই বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। উভয় দেশের মধ্যে শুল্ক আরোপের ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। আশা করা হচ্ছে, উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে বের করা হবে।