বাংলাদেশ

জামায়াত আমিরের হার্টে ৩ ব্লক, জরুরি বাইপাস সার্জারির প্রস্তুতি

Advertisement

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের হৃদযন্ত্রে তিনটি গুরুতর ব্লক ধরা পড়েছে। বুধবার রাজধানীর একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে এনজিওগ্রাম করার পর চিকিৎসকরা জরুরি ভিত্তিতে বাইপাস সার্জারির সিদ্ধান্ত নেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দলের পক্ষ থেকে তার ব্যক্তিগত সহকারী।

এনজিওগ্রামে ধরা পড়ে ৩টি গুরুতর ব্লক

বুধবার দুপুরে কার্ডিওলজিস্ট ডা. মমিনুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে ডা. শফিকুর রহমানের এনজিওগ্রাম সম্পন্ন হয়। পরীক্ষার ফলাফলে জানা যায়, তার হার্টের প্রধান ধমনিতে তিনটি বড় ব্লক রয়েছে। চিকিৎসক দলের মতামত অনুযায়ী, এই অবস্থায় এনজিওপ্লাস্টির পরিবর্তে বাইপাস সার্জারি করাই সবচেয়ে নিরাপদ সমাধান হবে।

হঠাৎ অসুস্থ হওয়ার ঘটনার পটভূমি

গত ১৯ জুলাই ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে বক্তৃতাকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন ডা. শফিকুর রহমান। তখনই তাকে দ্রুত রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকদিন চিকিৎসা শেষে তিনি বাসায় ফেরেন এবং চিকিৎসকদের পরামর্শে নিয়মিত ফলোআপে ছিলেন। সাম্প্রতিক শারীরিক পরীক্ষার অংশ হিসেবেই এনজিওগ্রামের মাধ্যমে গুরুতর ব্লকের বিষয়টি ধরা পড়ে।

চিকিৎসকদের জরুরি সার্জারির সিদ্ধান্ত

ডা. শফিকুর রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, “আজকের এনজিওগ্রামে দেখা গেছে, তার হার্টে ৩টি বড় ব্লক রয়েছে। চিকিৎসকরা এনজিওপ্লাস্টি না করে জরুরি ভিত্তিতে বাইপাস সার্জারি করার পরামর্শ দিয়েছেন। এই সার্জারি যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।”

তিনি আরো জানান, প্রথম দিকে বিদেশে চিকিৎসার পরিকল্পনা করা হলেও ডা. শফিকুর রহমান নিজেই দেশের বাইরে যাওয়ার প্রস্তাব নাকচ করেন। তিনি দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখছেন বলেই জানিয়েছেন।

বিদেশে না গিয়ে দেশের চিকিৎসায় আস্থা

দলীয় সূত্র জানিয়েছে, পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা প্রাথমিকভাবে বিদেশে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু জামায়াত আমিরের ইচ্ছা অনুযায়ী সার্জারিটি দেশে করানো হবে। তার মতে, দেশে হৃদরোগের উন্নত চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে, এবং তিনি এখানেই চিকিৎসা নিতে চান। এই সিদ্ধান্তে পরিবারের সদস্যরাও একমত হয়েছেন।

পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে দোয়ার আহ্বান

ডা. শফিকুর রহমানের শারীরিক অবস্থা নিয়ে তার পরিবার এবং জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দলের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে যেন এই অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয় এবং তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরে আসতে পারেন। দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এবং সার্জারির জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল প্রস্তুত রয়েছেন।

রাজনৈতিক অঙ্গনে উদ্বেগ ও প্রতিক্রিয়া

জামায়াত আমিরের অসুস্থতার খবরে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার সুস্থতা কামনা করে পোস্ট করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দলের শীর্ষ নেতার অসুস্থতা দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে সাময়িক প্রভাব ফেলতে পারে, তবে সবাই তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছে।

চিকিৎসকদের বক্তব্য ও করণীয়

কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞদের মতে, তিনটি বড় ব্লক থাকলে সাধারণত এনজিওপ্লাস্টি যথেষ্ট হয় না। এ ধরনের ক্ষেত্রে বাইপাস সার্জারি করাই নিরাপদ। এনজিওগ্রামের ফলাফলের পরপরই সার্জারির জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সঠিক সময়ে বাইপাস সার্জারি হলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

ভবিষ্যত করণীয় ও সম্ভাব্য সময়সূচি

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই সার্জারির তারিখ চূড়ান্ত করা হবে। ডা. শফিকুর রহমানের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলে দ্রুত অপারেশন সম্পন্ন করা হবে। অপারেশনের পর অন্তত এক মাস পর্যবেক্ষণে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।

সারসংক্ষেপ  

ডা. শফিকুর রহমানের শারীরিক অবস্থা নিয়ে দেশজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হলেও চিকিৎসকরা আশাবাদী। দ্রুত বাইপাস সার্জারি সম্পন্ন হলে তিনি আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবেন বলে মনে করা হচ্ছে। দেশবাসী এখন প্রার্থনা করছে তার সফল চিকিৎসা ও দ্রুত আরোগ্যের জন্য।

এম আর এম – ০৬১৪ , Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button