প্রযুক্তি

ঢাকায় প্রযুক্তিনির্ভর বিনিয়োগ সম্মেলন: পানির নিচে রোবট ও ১৫০০ তরুণ উদ্যোক্তা

ঢাকায় শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলনে তরুণ উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে স্টার্টআপ কানেক্ট পর্ব। দেশের নানা প্রান্ত থেকে আগত প্রায় দেড় হাজার তরুণ-তরুণী সম্মেলনে অংশ নেন, সঙ্গে হাজির হয় নতুন প্রযুক্তি ও পরিবেশবান্ধব উদ্ভাবন

এই আয়োজনে প্রদর্শিত হয়েছে এমন রোবট প্রযুক্তি, যা পানির নিচে কাজ করতে সক্ষম, পাশাপাশি ছিল লবণাক্ত জলাধারে চাষযোগ্য ফসল উৎপাদনের পদ্ধতি এবং ইলেকট্রিক গাড়ির উদ্ভাবন

পানির নিচে রোবট: জাহাজ পরিদর্শনা থেকে মাছ চাষের তথ্য সংগ্রহ

ডুবটেক’ নামের একটি স্টার্টআপ পানির নিচে রোবটিক প্রযুক্তির বাস্তব প্রয়োগ উপস্থাপন করে। প্রতিষ্ঠানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সৌমিক হাসান জানান, ডুবটেকের রোবটগুলো ব্যবহার করা হয়—

  • বন্দর এলাকায় আগত জাহাজের পরিদর্শনে
  • অ্যাকুয়াকালচার প্রকল্পে পানির নিচের তথ্য সংগ্রহে

তারা এক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে কাজ করছেন এবং এই সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টা করছেন।

পরিবেশবান্ধব কৃষি: লবণাক্ততা কমিয়ে মাছ ও ফসল চাষ

ইকোসেন্টিল’ নামের আরেকটি স্টার্টআপ দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত জলাধারে চাষ উপযোগী পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছে। তারা হেলোফাইটস (হেলেঞ্চা প্রজাতির গাছ) রোপণের মাধ্যমে জলাধারের লবণাক্ততা হ্রাস করে, পরে সেই জলাধারে মাছ বা ফসল চাষ সম্ভব হয়।

তারা এ পদ্ধতির বাণিজ্যিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে।

স্টার্টআপ কানেক্ট: সম্ভাবনার কেন্দ্রস্থল

সম্মেলনের স্টার্টআপ কানেক্ট অংশে দেশি-বিদেশি উদ্ভাবনী উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এতে অংশ নেওয়া ২৫টিরও বেশি স্থানীয় ও বৈশ্বিক ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান তরুণ উদ্যোক্তাদের ধারণা ও উদ্ভাবন ঘুরে দেখেন।

মূল ভেন্যুর বাইরে চারটি ভিন্ন হলে বিষয়ভিত্তিক অধিবেশন ও প্রযুক্তি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথিদের বক্তব্য: স্টার্টআপ খাতে নীতিগত সহায়তা জোরদার

সম্মেলনের প্রথম দিনের শেষ বিকেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন—

  • ফয়েজ আহমদ তৈয়ব, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী
  • আশিক চৌধুরী, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান
  • শফিকুল আলম, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

আশিক চৌধুরী বলেন,

“এই আয়োজন শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক নয়, সারা দেশ থেকে উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণই আমাদের সাহস ও ভবিষ্যতের ইঙ্গিত। স্টার্টআপ খাতে দীর্ঘদিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার এখন সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করছে।”

তিনি আরও জানান, স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের বহু প্রতীক্ষিত দাবি—শেয়ার সোয়াপিংয়ের অনুমতি—বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যেই বাস্তবায়ন করেছে। এখন থেকে দেশীয় স্টার্টআপ বিদেশি স্টার্টআপের সঙ্গে শেয়ার বিনিময় করতে পারবে, যা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকর্ষণে বড় এক ধাপ।

উদ্ভাবনী তরুণদের জন্য বিনিয়োগের দরজা খুলছে

এই ধরনের সম্মেলন শুধু নতুন উদ্ভাবন উপস্থাপনের সুযোগই তৈরি করছে না, বরং বাস্তব বিনিয়োগের সংযোগও স্থাপন করছে। স্টার্টআপ কানেক্ট–এর মতো আয়োজন তরুণদের উদ্ভাবনকে রূপ দিতে পারে জাতীয় প্রবৃদ্ধির শক্তিতে

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button