বানিজ্য

ছুটিতে এটিএম সেবা সবসময় চালু রাখার নির্দেশ

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দীর্ঘ ছুটির মধ্যে দেশের ব্যাংকিং খাতের সেবা যাতে ব্যাহত না হয়, সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে। এই নির্দেশনার আওতায় ঈদের ছুটিতে এটিএম বুথ, অনলাইন ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা সার্বক্ষণিকভাবে চালু রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা নিশ্চিতকরণের নির্দেশ

ব্যাংকিং লেনদেনের সুবিধার্থে এবং গ্রাহকদের ভোগান্তি এড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছে। এটিএম বুথে যেন অর্থের ঘাটতি না হয়, সেজন্য ব্যাংকগুলোকে আগেভাগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, “ঈদের দীর্ঘ ছুটির মধ্যে ব্যাংকের শাখাগুলো বন্ধ থাকলেও গ্রাহকদের আর্থিক লেনদেন চালিয়ে যেতে যেন কোনো অসুবিধা না হয়, সে জন্য এটিএম বুথগুলোতে যথেষ্ট পরিমাণ নগদ টাকা রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।”

অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিং সার্বক্ষণিক সচল রাখার ব্যবস্থা

ঈদের ছুটিতে গ্রাহকরা যাতে নির্বিঘ্নে অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে পারেন, সে জন্য ব্যাংকগুলোর আইটি বিভাগকে সার্বক্ষণিক নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকেও নিরবিচারে সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, “অনলাইন ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং এবং ইন্টারনেট ব্যাংকিং সংক্রান্ত যেকোনো কারিগরি সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে হবে। যদি কোনো কারিগরি ত্রুটি দেখা যায়, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।”

সাইবার নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থা

ব্যাংকিং খাতের ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিশেষ নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। অনলাইন লেনদেনে সম্ভাব্য সাইবার হামলা ঠেকাতে ব্যাংকগুলোকে আগেভাগেই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, “সাইবার হামলার সম্ভাবনা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহকদের সতর্ক করতে হবে এবং ব্যাংকের আইটি বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”

ঈদের ছুটির বিশেষ সময়সূচি

সাপ্তাহিক ছুটি, ঈদের ছুটি এবং বিশেষ ছুটি মিলিয়ে এবারের ঈদুল ফিতরে টানা নয় দিনের ছুটি থাকবে। ২৮ মার্চ শুক্রবার থেকে শুরু হয়ে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত এই ছুটি চলবে। তবে, গ্রাহক সুবিধার্থে নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংকের শাখা ২৮ ও ২৯ মার্চ খোলা থাকবে।

ব্যাংকগুলোর নির্ধারিত শাখাগুলোতে এই দুই দিন নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত লেনদেন করা যাবে। অন্যদিকে, অনলাইন ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং এবং এটিএম বুথের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক লেনদেন চালু থাকবে।

ব্যাংকগুলোর করণীয়

১. এটিএম বুথ সচল রাখা: প্রতিটি বুথে পর্যাপ্ত টাকা সংরক্ষণ করতে হবে এবং এটিএম সেবার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। 2. অনলাইন ব্যাংকিং সচল রাখা: সার্ভার সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা রাখতে হবে। 3. মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন সচল রাখা: বিকাশ, নগদ, রকেটসহ অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবা যেন নিরবিচারে পরিচালিত হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। 4. সাইবার নিরাপত্তা: সম্ভাব্য সাইবার হুমকি প্রতিরোধে ব্যাংকের আইটি বিভাগকে ২৪/৭ প্রস্তুত থাকতে হবে। 5. গ্রাহক সহায়তা: যেকোনো লেনদেন সমস্যার সমাধানে হটলাইন চালু রাখতে হবে।

গ্রাহকদের জন্য পরামর্শ

১. ছুটির আগে প্রয়োজনীয় লেনদেন সেরে ফেলুন – এটিএম বুথের চাপ কমাতে এবং ঝামেলা এড়াতে অগ্রিম পরিকল্পনা করে অর্থ উত্তোলন করুন। 2. অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করুন – জরুরি প্রয়োজনে ব্যাংকে না গিয়ে মোবাইল ব্যাংকিং বা অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ করুন। 3. অজানা লিংক ও স্ক্যামের বিষয়ে সতর্ক থাকুন – কোনো সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক করবেন না বা ব্যাংকের তথ্য কাউকে দেবেন না। 4. গ্রাহক সেবা নম্বর সংরক্ষণ করুন – জরুরি প্রয়োজনে ব্যাংকের হেল্পলাইন নম্বর সংরক্ষণ করুন।

উপসংহার

ঈদুল ফিতরের দীর্ঘ ছুটিতে দেশের আর্থিক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে গ্রাহকরা নির্বিঘ্নে লেনদেন করতে পারবেন। ব্যাংকগুলোর এসব নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে, সাধারণ মানুষ স্বস্তির সঙ্গে তাদের আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button