জাকসু নির্বাচনের ফলাফল কখন, যা জানালেন সদস্য সচিব

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। ভোটগ্রহণ শেষে কেন্দ্রগুলো থেকে ব্যালটবাক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে পৌঁছেছে।
নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক রশিদুল আলম জানান, ভোট গণনা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হবে, তাই ফলাফল শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত পেতে সময় লাগতে পারে। নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ১১ হাজার ৭৫৯ জন এবং কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৭৮ জন প্রার্থী।
ভোটগ্রহণের বিস্তারিত
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলের ২২৪টি বুথে ভোটগ্রহণ চলে। বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটের অংশগ্রহণ হার প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ। তবে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পাঁচ ঘণ্টা পরও গণনা কার্যক্রম শুরু হয়নি।
নির্বাচনের সময় পুলিশ, আনসার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তায় কাজটি পরিচালিত হয়। ভোটগ্রহণের সময় রবীন্দ্রনাথ হলে ৭৫%, প্রীতিলতা হলে ৬২%, ১০ নং ছাত্র হলে ৭৩%, ১৩ নং হলে ৫৬% ভোট পড়েছে। এছাড়া ফজিলাতুন্নেছা হলে ৪২%, সুফিয়া কামাল হলে ৫৪%, কামালউদ্দিন হলে ৭২%, তারামন বিবি হলে ৬০%, নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে ৪৯%, আর সালাম বরকত হলে ৭৫ শতাংশ ভোটগ্রহণ হয়েছে।
ভোট গণনার পদ্ধতি
অধ্যাপক রশিদুল আলম জানান, এইবার ভোট গণনা সম্পূর্ণ ম্যানুয়ালি হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে সিনেট ভবনে ভোট গণনা শুরু করা হবে। ম্যানুয়াল গণনার কারণে ফলাফল প্রকাশে কিছুটা সময় লাগবে।
তিনি আরও বলেন, “ফলাফল যত দ্রুত সম্ভব নিশ্চিত ও সঠিকভাবে প্রকাশ করা হবে। কোনো ধরনের চাপ বা তাড়াহুড়ো গণনার মানকে প্রভাবিত করতে পারবে না।”
জাকসু নির্বাচন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া। পূর্ববর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণের হার সাধারণত ৬০ শতাংশের কাছাকাছি থাকে।
এই নির্বাচনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সংসদ এবং হল সংসদে বিভিন্ন দলের প্রার্থী ও স্বাধীন প্রার্থীরা অংশগ্রহণ করেছেন। আগের নির্বাচনের তুলনায় এবারের ভোটে অংশগ্রহণ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতার মান আরও উঁচু হয়েছে।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
নির্বাচনের ফলাফলের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।
ছাত্রনেতারা বলছেন, ফলাফল প্রকাশের অপেক্ষা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করেছে। অনেকে আশা করছেন যে ফলাফল দ্রুত প্রকাশ পেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুসংগত হবে।
বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞ মতামত
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনা করার ফলে ফলাফল প্রকাশে কিছুটা বিলম্ব হলেও এটি নির্বাচনের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ।
রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষক ড. মনিরুল ইসলাম বলেন, “ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সচেতনতা ও অংশগ্রহণের মান নির্ধারণে সহায়ক। সঠিক গণনার মাধ্যমে যে কোনো বিতর্ক এড়ানো সম্ভব।”
অন্যদিকে, শিক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক রুমা খান বলেন, “ভোটের অংশগ্রহণের হার ও নির্বাচনের স্বচ্ছতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে দায়িত্বশীল রাজনৈতিক চেতনা তৈরি করছে। ফলাফল দ্রুত প্রকাশ করা হলে শিক্ষার্থীরা তা মেনে চলার জন্য প্রস্তুত থাকবে।”
শেষ কথা
জাকসু এবং হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনা চলছে এবং ফলাফল শুক্রবার দুপুরের মধ্যে প্রকাশ পেতে পারে।
নির্বাচনের সঠিক ও স্বচ্ছ ফলাফল শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সচেতনতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক পরিবেশের স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এখন সময় শুধু অপেক্ষার, শিক্ষার্থীরা ফলাফলের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
এম আর এম – ১২৯৮,Signalbd.com