বাংলাদেশ

দেশ যেন মৌলবাদের অভয়ারণ্য না হয়: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের জন্য মৌলবাদ ও চরমপন্থার পুনরাবৃত্তি রোধে সতর্কতার বার্তা দিয়েছেন। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘গণতন্ত্রে উত্তরণে কবি সাহিত্যিকদের ভূমিকা ও করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তারেক রহমান বলেন, “বাংলাদেশ যেন কখনও চরমপন্থা বা মৌলবাদের অভয়ারণ্য না হয়। যে স্বৈরাচারকে দেশের মানুষ সম্প্রতি বিতাড়িত করেছে, সেই পুনর্জাগরণ রোধ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।”

জাতীয় প্রেস ক্লাবে মতবিনিময়

রোববার বিকেলে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে বিএনপি মিডিয়া সেলের আয়োজনে কবিতা পরিষদের কবি ও সাহিত্যিকরা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে কবি ও সাহিত্যিকরা তাদের লেখার স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতার উপর জোর দেন।

তারেক রহমান বলেন, “কবি-সাহিত্যিকরা আমাদের সমাজের নীরব অনুভূতি প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম। তারা আমাদের সুখ-দুঃখ, আন্দোলন ও প্রত্যাশা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন। যুগে যুগে তারা মুক্তির আহ্বান জানিয়ে আসছেন।”

গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় জোর

তিনি বলেন, দেশের জনগণই এ দেশের প্রকৃত মালিক। মানুষের ভোটাধিকার রক্ষা ছাড়া জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। এজন্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের গুরুত্ব অস্বীকারযোগ্য নয়। তারেক আরও বলেন, “গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও বাকস্বাধীনতার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এই প্রক্রিয়া অপরিহার্য।”

কবি-সাহিত্যিকদের ভূমিকা

তারেক রহমান বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, কবি ও সাহিত্যিকরা বিভিন্ন সময়ে মানব সভ্যতার প্রতি দায়বদ্ধ থেকেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় কবিতা ও দেশাত্মবোধক সংগীত ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণার উৎস। স্বাধীনতার পরও দেশের সব ক্রান্তিলগ্নে তারা জনগণকে সচেতন করেছেন।

স্বৈরাচার ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে সতর্কতা

তিনি বলেন, “স্বৈরাচার ও মৌলবাদের পুনরাবৃত্তি রোধে আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। রাজনৈতিক মতাদর্শে ভিন্নতা থাকলেও দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আমরা এক। এটা কোনো বিষয় নয় যে, আমাদের আদর্শিক অবস্থান এক নয়, মূল বিষয় হলো দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বজায় রাখা।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিতির গুরুত্ব

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনি, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদি আমীন, লেখক আবু সাঈদ খান এবং কবিতা পরিষদের অন্যান্য প্রতিনিধি।

দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি

তারেক রহমান বলেন, আজকের এই সময়ে দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রতি দৃঢ় আস্থা প্রকাশ করাই আমাদের মূল দায়িত্ব। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের স্বার্থে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি আরও যোগ করেন, “দেশ কখনো চরমপন্থা বা মৌলবাদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠতে পারে না। আমাদের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দায়িত্ব হলো জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এবং স্বাধীন মতপ্রকাশের পরিবেশ বজায় রাখা।”

সমাপনী

মতবিনিময় অনুষ্ঠান শেষে তারেক রহমানের বার্তা স্পষ্ট—বাংলাদেশকে চরমপন্থা ও মৌলবাদ থেকে দূরে রাখা এবং গণতন্ত্রের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। তিনি দেশের সকল নাগরিক, বিশেষত কবি ও সাহিত্যিকদের প্রতি আহ্বান জানান, এই লক্ষ্যে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে।

এম আর এম – ০৯১২, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Advertisement
Back to top button