বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তার প্রেমিকাকে ধর্ষণ ছাত্রদল নেতার!

নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলায় ভয়াবহ একটি ঘটনার জন্ম দিয়েছেন ছাত্রদল নেতা ফয়সাল আহমেদ ওরফে দুর্জয় (২৪)। অভিযোগ উঠেছে, তিনি বন্ধুকে ছাত্রলীগ নেতা সাজিয়ে পুলিশের মাধ্যমে আটক করিয়ে নিজের বন্ধুর হবু স্ত্রীকে হোটেল কক্ষে ধর্ষণ করেছেন। ঘটনার পরপরই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং জেলা ছাত্রদল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
পরিকল্পিত ফাঁদ: বন্ধু সেজে পুলিশ ডেকে প্রেমিককে ধরিয়ে দেন
দুর্জয় দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং উপজেলার চন্ডিগড় গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে। মঙ্গলবার বিকেলে দুর্গাপুর পৌর এলাকার বিরিশিরি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, ভিকটিম শিক্ষার্থী একজন অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী, যিনি রাজধানীর একটি কলেজে পড়াশোনা করেন। তার সঙ্গে নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার একজন কলেজ শিক্ষার্থীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। সোমবার তারা দুর্গাপুরে ঘুরতে আসেন এবং স্থানীয় একটি হোটেলে ওঠেন।
তবে ফয়সাল, যিনি প্রেমিকের বন্ধু হিসেবে পরিচিত, পরিকল্পনা অনুযায়ী ছলচাতুরীর আশ্রয় নেন। ওসি বলেন, “বিকেল ৩টার দিকে প্রেমিক খাবার কিনতে বাইরে গেলে ফয়সাল পুলিশকে ফোন করে জানান, তার বন্ধু একজন ছাত্রলীগ নেতা এবং সন্দেহজনক কর্মকাণ্ডে জড়িত। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আটক করে।”
হোটেল কক্ষে ধর্ষণের অভিযোগ
পুলিশের কাছে প্রেমিক জানান, তার হবু স্ত্রী হোটেলের কক্ষে একা রয়েছেন। এরপর পুলিশ তাকে সঙ্গে নিয়ে হোটেল রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ পায় এবং ভিতর থেকে চিৎকার শুনে দরজা ভেঙে ফয়সাল আহমেদকে আটক করে। তখন জানা যায়, ছাত্রীকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেছে ফয়সাল। পুরো ঘটনা ঘটতে সময় লেগেছে মাত্র আধা ঘণ্টা।
মামলা ও ছাত্রদল থেকে বহিষ্কার
ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী নিজেই ফয়সালের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। ফয়সালকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার আদালতে হাজির করা হবে। ইতোমধ্যে তাকে নেত্রকোণা জেলা সদর হাসপাতালে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক অনিক মাহবুব চৌধুরী বলেন, “দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও জঘন্য অপরাধে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ফয়সাল আহমেদকে সংগঠন থেকে অবিলম্বে বহিষ্কার করা হয়েছে।”
এই ঘটনা শুধু একটি নিরীহ শিক্ষার্থীর জীবনে নয়, দেশের রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের চেহারাতেও বড় প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে। দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে ব্যক্তিস্বার্থে আইনবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়া সমাজে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে।