আঞ্চলিক

খুলনায় মরা গরুর ৫ মণ গোশত জব্দ, দুইজন গ্রেপ্তার

Advertisement

খুলনা নগরীতে মরা গরুর গোশতসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর গল্লামারী এম এ বারী সড়কে চেকপোস্টে এই অভিযান পরিচালিত হয়। এসময় গোশত পরিবহনে ব্যবহৃত একটি পিকআপ গাড়িও জব্দ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা ও অভিযান

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার নিকারীপাড়া জলিলপুর এলাকার বাসিন্দা মোঃ মমিন এবং সোনাডাঙ্গা মডেল থানাধীন আলীর ক্লাবসংলগ্ন আল আমিন মহল্লার বাসিন্দা তামিম হাওলাদার

সোনাডাঙ্গা থানার তদন্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, এএসআই মোঃ আলিম হোসেন গল্লামারী এম এ বারী সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছিলেন। ওই সময় একটি পিকআপ গাড়ি (নম্বর ন-১১-১২৯০) থামানোর পর চালক মোঃ মমিনের কাছ থেকে গরুর চার মণ ৩০ কেজি গোশত থাকার কথা জানা যায়।

গোশতের প্রকৃত মালিক ও গরুর মৃত্যুর তথ্য

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মোঃ মমিন জানান, গোশতটি সোনাডাঙ্গা থানাধীন আল আমিন এলাকার তামিমের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আনা হয়েছে, যা চুয়াডাঙ্গা থেকে সংগ্রহ করা। পরে তামিমকেও ঘটনাস্থলে ডেকে আনা হয়, যিনি পুলিশের কাছে গোশতের প্রকৃত মালিকের নাম এবং ঠিকানা জানান।

জানা গেছে, গোশতের মালিক চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সাহারেজ হোসেন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, গরুটি গত ১১ জুন সন্ধ্যায় স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) করে মারা গেলে তা জবাই করা হয়। গরুর গোশত ৬৩ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছিলো এবং রাত ৩টার দিকে গোশত নিয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন।

অসাধু ব্যবসায়ী কর্তৃক মরা গরুর গোশত বিক্রি

তদন্তে উঠে এসেছে, গ্রেপ্তার আসামিরা বিভিন্ন জায়গা থেকে রোগাক্রান্ত ও মৃত গরুর গোশত সংগ্রহ করে খুলনার বিভিন্ন হোটেল ও ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে আসছিলেন। এই কার্যক্রম জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আইনগত ব্যবস্থা ও পরবর্তী পদক্ষেপ

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে খাদ্যনিরাপত্তা আইন, ২০১৩-এর ৫৮ তফসিলে ক্রমিক নম্বর ১৫-এর ৩৪ ধারায় মামলা করা হয়েছে।

জব্দকৃত গোশতের মধ্যে ১ কেজি অংশ পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য রাখা হয়েছে। বাকী গোশত আদালতের নির্দেশে ধ্বংস করা হবে যাতে কোনো ভোক্তা বিপদে না পড়ে।

কেন মরা গরুর গোশত বিক্রি ভয়ংকর?

মরা বা রোগাক্রান্ত গরুর গোশত জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করে। এর মাধ্যমে খাদ্যে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও অন্যান্য ক্ষতিকারক জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে, যা ভোক্তাদের অসুস্থতা, খাদ্যজনিত রোগ এবং অন্য সংকট সৃষ্টি করতে পারে।

কর্তৃপক্ষের বার্তা

পুলিশ ও খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ মানুষকে সতর্ক করে বলেছেন, দয়া করে শুধুমাত্র অনুমোদিত ও স্বচ্ছন্দে নিরাপদ উৎস থেকে মাংস কেনাকাটা করুন। অনিয়মীদের বিরুদ্ধে কড়া আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button