ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে ফ্রান্স, ঘোষণা আসতে পারে জুনেই: প্রেসিডেন্ট মাখোঁ

বিশ্ব রাজনীতিতে এক নতুন মোড় নিচ্ছে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ইস্যু। এবার ফ্রান্স জানিয়েছে, তারা শিগগিরই ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে। এমনকি আসন্ন জুন মাসেই আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ।
ফ্রান্সের পক্ষ থেকে পরিষ্কার বার্তা
বুধবার (৯ এপ্রিল) ফরাসি সম্প্রচারমাধ্যম ফ্রান্স-৫–এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাখোঁ বলেন,
“আমাদের স্বীকৃতির দিকে এগোতে হবে এবং আমরা আগামী মাসগুলোতেই তা করব।”
তিনি জানান, নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য একটি জাতিসংঘ সম্মেলন কিংবা সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথ আয়োজনে এক কূটনৈতিক সম্মেলন-এ এই স্বীকৃতির বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে। ফ্রান্সের এই পদক্ষেপকে ফিলিস্তিনি ইস্যুতে একটি উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক সমর্থন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ
মাখোঁ বলেন,
“আমাদের লক্ষ্য, জুন মাসে সৌদি আরবের সঙ্গে এক সম্মেলনের আয়োজন করা, যেখানে পারস্পরিক স্বীকৃতির ভিত্তিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হতে পারে।”
এই সম্মেলনে একাধিক দেশের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে এবং ফ্রান্সের এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী ফিলিস্তিনের কূটনৈতিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইউরোপজুড়ে বাড়ছে স্বীকৃতির প্রবণতা
ফ্রান্সের আগে স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে ইতোমধ্যেই ২০২৪ সালের মে মাসে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ সে সময় বলেছিলেন:
“স্পেন ফিলিস্তিনকে এমন একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে, যার রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম এবং যা গাজা উপত্যকা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরকে অন্তর্ভুক্ত করবে।”
তিনি আরও বলেন,
“১৯৬৭ সালের সীমান্ত পরিবর্তনে সব পক্ষ একমত না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো পরিবর্তনকে স্বীকৃতি দেব না।”
এই উদ্যোগের সঙ্গে মিল রেখে স্পেন সরকারের মন্ত্রিসভাও আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয়, যার উদ্দেশ্য ছিল ইসরায়েল–ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনায় ইতিবাচক চাপ সৃষ্টি করা।
এক মাস পর আর্মেনিয়াও একই রকম স্বীকৃতি দেয়। এভাবে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪৭টি দেশ ইতোমধ্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
সুইডেন ছিল পথিকৃৎ
এর আগে, ২০১৪ সালে সুইডেন প্রথম ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ হিসেবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়। এরপর, ইইউ সদস্য হওয়ার আগেই বুলগেরিয়া, সাইপ্রাস, চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড ও রোমানিয়া-ও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল।
সারসংক্ষেপ:
- ফ্রান্স আগামী জুন মাসেই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পারে
- সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথভাবে কূটনৈতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হবে
- ইতোমধ্যে ১৪৭টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে
- ইউরোপে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন দ্রুত বাড়ছে
- ২০১৪ সালে সুইডেন প্রথম ইইউ দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল