বিশ্ব

জুলাই অভ্যুত্থানে আক্রান্তদের সহায়তায় ২০ লাখ ইউরো দেবে ইইউ

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জুলাই মাসে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তায় ২০ লাখ ইউরো বরাদ্দ দিয়েছে। এই সহায়তার মাধ্যমে প্রায় আট হাজার ব্যক্তি পুনর্বাসনের সুবিধা পাবেন। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসিএস) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে, যেখানে বাংলাদেশ সরকার সহযোগিতা করবে।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও সময়কাল

প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক নাম “দ্য পাথওয়েজ টু হিলিং: এ সারভাইভার সেন্ট্রেড অ্যাপ্রোচ টু অ্যাড্রেস ভায়োলেন্স অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশনস”। ইইউ কর্তৃক বরাদ্দকৃত ২০ লাখ ইউরো ব্যবহার করে ২০২৬ সালের আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পটি পরিচালিত হবে।

জুলাই-আগস্টে সংঘটিত সহিংসতায় যেসব ব্যক্তি আহত হয়েছেন, তাঁদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা ফিরিয়ে আনার জন্য এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে তাঁদের আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং সামাজিক সংহতি বাড়ানোর জন্যও নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

সহায়তার পরিধি ও কাঠামো

এই প্রকল্পের আওতায় নিম্নলিখিত সুবিধা প্রদান করা হবে:

  1. পুনর্বাসন ও চিকিৎসা সহায়তা:
    • আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করা হবে।
    • যাঁরা শারীরিক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছেন, তাঁদের জন্য সহায়ক উপকরণ যেমন হুইলচেয়ার, ক্র্যাচ ইত্যাদি সরবরাহ করা হবে।
  2. মানসিক স্বাস্থ্যসেবা:
    • ক্ষতিগ্রস্তদের মানসিকভাবে সুস্থ করে তুলতে কাউন্সেলিং এবং মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদান করা হবে।
    • বিশেষজ্ঞ মনোবিজ্ঞানীদের মাধ্যমে থেরাপি সেশন পরিচালনা করা হবে।
  3. আর্থিক ও কর্মসংস্থান সহায়তা:
    • আয়ের নতুন উৎস খুঁজতে ও দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
    • উদ্যোক্তা হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ সুবিধা দেওয়া হবে।
  4. প্রকল্পের বাস্তবায়ন অঞ্চল:
    • ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় এই প্রকল্প পরিচালিত হবে।

ইইউ ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি

ইইউর বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, সরকার ও অন্যান্য অংশীজনদের সহযোগিতায় প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও এটি অব্যাহত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে। ইইউর প্রতিনিধি দলের মতে, ‘বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে এই প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং আমরা চাই এটি দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলুক।’

ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য আশার আলো

জুলাই-আগস্টের আন্দোলন ও সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্র, শ্রমিক, সাংবাদিক এবং তাঁদের পরিবার এই সহায়তার মাধ্যমে পুনরায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইইউর এই উদ্যোগ মানবাধিকার রক্ষা ও পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button