স্বাধীন সংস্থার প্রধান বরখাস্তে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চান ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, সরকারি তথ্য ফাঁসকারীদের সুরক্ষা প্রদানকারী একটি স্বাধীন মার্কিন সংস্থার প্রধান হ্যাম্পটন ডেলিঙ্গারকে বরখাস্ত করতে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ট্রাম্পের প্রশাসন গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে প্রথম আইনি লড়াইয়ের সূচনা হলো।
ট্রাম্পের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ডেলিঙ্গারকে বরখাস্ত করেন। তবে ১২ ফেব্রুয়ারি এক ফেডারেল বিচারপতি ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ দেন। বিচার বিভাগ আদালতকে ওই আদেশ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছে, কিন্তু মামলাটি এখনও আদালতে নথিভুক্ত হয়নি।
ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ
ফেডারেল সরকারকে নতুন করে সাজানোর লক্ষ্যে ট্রাম্প কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত স্বাধীন সংস্থার প্রধানদের অপসারণের মতো বেশ কিছু আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এই পদক্ষেপগুলোকে সুপ্রিম কোর্ট কীভাবে দেখবে, তা এই মামলার মাধ্যমে পরিষ্কার হবে।
সুপ্রিম কোর্টের রক্ষণশীল সংখ্যাগরিষ্ঠতা
সুপ্রিম কোর্টে রক্ষণশীলদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। ৯ সদস্যের মধ্যে ৬ জনই রক্ষণশীল, এবং এর মধ্যে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে নিয়োগ পাওয়া তিন সদস্যও রয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত সলিসিটর জেনারেল সারা হ্যারিস আদালতে জমা দেওয়া কাগজপত্রে উল্লেখ করেছেন, “প্রেসিডেন্ট কতক্ষণ তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে একজন সংস্থার প্রধানকে নিযুক্ত রাখবেন, সে ব্যাপারে নির্দেশ জারি করে নির্বাহী ক্ষমতা দখল করার সুযোগ নিম্ন আদালতগুলোকে দেওয়াটা আদালতের (সুপ্রিম কোর্ট) উচিত হবে না।”
ডেলিঙ্গারের মামলা
ডেলিঙ্গারের পাঁচ বছরের মেয়াদ ২০২৯ সালে শেষ হবে। ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি একটি ই-মেইলের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, ট্রাম্প তাঁকে বরখাস্ত করেছেন। এরপর তিনি একটি মামলা করেন। ডেলিঙ্গারের মামলায় বলা হয়েছে, ট্রাম্প এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে তাঁকে বরখাস্ত করেছেন।
ডেলিঙ্গারের যুক্তি হলো, ফেডারেল আইন কেবল “অদক্ষতা, কর্তব্যে অবহেলা, অথবা অফিসে অসদাচরণের” জন্য কাউকে অপসারণের অনুমতি দেয়। তিনি আরও বলেন, সিভিল সার্ভিসকে রক্ষা করার এবং অসদাচরণের অভিযোগ তদন্ত করার ক্ষমতা এখন আগের চেয়ে আরও বেশি প্রয়োজন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ মার্কিন সরকারের কেন্দ্রীয় কাঠামোর ওপর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ট্রাম্পের প্রশাসনের ক্ষমতা এবং স্বাধীন সংস্থাগুলোর সুরক্ষা নিয়ে নতুন আলোচনার সূচনা হতে পারে। এই মামলার ফলাফল কেবল ট্রাম্পের জন্য নয়, বরং মার্কিন সরকারের ভবিষ্যৎ পরিচালনার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।