বিশ্ব

ভারত-আফগানিস্তান দুই ফ্রন্টেই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত পাকিস্তান

Advertisement

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সম্প্রতি জানিয়েছেন, তার দেশ দুই ফ্রন্টেই যুদ্ধের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। ভারত ও আফগানিস্তানের সঙ্গে যে কোনো সামরিক সংঘর্ষ মোকাবিলার জন্য ইসলামাবাদ পূর্ণ শক্তি নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি বলেন, “আমরা প্রস্তুত; পূর্ব ও পশ্চিম সীমান্তে আমাদের যুদ্ধের সক্ষমতা রয়েছে। আল্লাহ আমাদের প্রথম রাউন্ডে সাহায্য করেছেন এবং দ্বিতীয় রাউন্ডেও তিনি আমাদের সাহায্য করবেন।”

ইসলামাবাদে বিস্ফোরণের পর নিরাপত্তা জোরদার

পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে সম্প্রতি একটি ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যার ফলে ১২ জন নিহত ও ৩০ এর বেশি আহত হন। এই ঘটনার পর দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে হুঁশিয়ারি দেন যে, পাকিস্তান যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত আগ্রাসনের মোকাবিলা করবে।

স্থানীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী নিশ্চিত করেছেন, আত্মঘাতী হামলার সঙ্গে একজন আফগান নাগরিক জড়িত। ইসলামাবাদ আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, এবং শহরের অন্যান্য আদালত ভবনেও সতর্কতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

পূর্ব ও পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তানের প্রস্তুতি

খাজা আসিফ জানান, ভারতের সঙ্গে পূর্ব সীমান্ত এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান শক্তিশালী অবস্থান নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, “যদি তারা চূড়ান্ত লড়াই চায়, আমাদের কাছে তখন যুদ্ধ ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকবে না। আমরা শান্তি চাই, তবে আমাদের দেশকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করব।”

পাকিস্তানি সূত্র জানায়, প্রতিরক্ষামন্ত্রী কেবল হুমকি প্রদানই করেননি, বরং সীমান্ত অঞ্চলে সামরিক প্রস্তুতি এবং নজরদারি জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন।

আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ও সম্ভাব্য উত্তেজনা

খাজা আসিফ আফগানিস্তানকে সতর্ক করেছেন যে, দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিভাজন ও ত্রাসী কর্মকাণ্ড পাকিস্তানকে প্রয়াসী পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করতে পারে। তিনি অভিযোগ করেছেন, আফগানিস্তানের তালেবান সরকার বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় দিচ্ছে, যা পাকিস্তানের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে।

তিনি বলেন, আফগানিস্তানের কিছু অংশ ভারতীয় প্রভাবাধীন, আর অন্য অংশ অন্য কোনও শক্তির নিয়ন্ত্রণে। তাই দুই ফ্রন্টে যুদ্ধের সম্ভাবনা থাকলেও পাকিস্তান শান্তিপ্রিয় অবস্থান বজায় রাখতে চাইছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও কূটনৈতিক প্রভাব

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পাকিস্তানের এই হুঁশিয়ারি আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত ও আফগানিস্তান সংলগ্ন অঞ্চলে সামরিক প্রস্তুতির ফলে সম্ভাব্য সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ছে।

পূর্ববর্তী হামলার পর পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ, এবং আফগানিস্তানের ভেতরের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা পরিস্থিতি আরও জটিল করছে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এ ধরনের উত্তেজক মন্তব্যগুলো কেবল রাজনৈতিক কৌশল নয়, বরং ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক ও ত্রিপাক্ষিক আলোচনায় প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য

সেনা ও কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলেন, পাকিস্তানের দুই ফ্রন্টে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি কেবল রক্ষণশীল প্রতিরক্ষা কৌশল নয়, বরং এটি একটি রাজনৈতিক সংকেতও বহন করে। তারা উল্লেখ করেছেন, “যেখানে সীমান্তে উত্তেজনা এবং সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটছে, সেখানে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা প্রদর্শন করা প্রয়োজন।”

বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, আফগানিস্তান ও ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যার সমাধান কূটনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে একসঙ্গে চিন্তা করে করা উচিত।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের মন্তব্যে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, দেশটি পূর্ব ও পশ্চিম সীমান্তে সম্ভাব্য যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি সম্পূর্ণ রেখেছে। বিস্ফোরণ ও সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান সতর্ক থাকলেও, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভবিষ্যতের পরিস্থিতি নির্ভর করবে কূটনৈতিক সংলাপ, সীমান্ত নজরদারি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতার ওপর।

এম আর এম – ২২৩৬,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button