বিশ্ব

ট্রাম্পকে ‘ফ্যাসিবাদ’ আখ্যা দিয়ে আমেরিকায় ব্যাপক বিক্ষোভ, দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়ার দাবি

Advertisement

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার বর্ষপূর্তিতে রাজধানী ওয়াশিংটনে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সরকারের নীতি ও ট্রাম্পের শাসনভঙ্গির বিরুদ্ধে সরব হন। বিক্ষুব্ধ জনতার মধ্যে এমনও অভিযোগ উঠে যে, বর্তমান প্রশাসনের কার্যক্রম ফ্যাসিবাদী আচরণের ছাপ ফেলেছে।

বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে এখনই পদত্যাগ করার আহ্বান জানান। রাজপথে তারা ‘গণতন্ত্র রক্ষা করুন’, ‘ট্রাম্প পদত্যাগ করুন’ ও ‘আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে’-ধরনের ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।

বিক্ষোভের সময় দেশব্যাপী ট্রাম্পের চলমান নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ পায়। বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক নিরাপত্তা এবং অভিবাসন নীতি নিয়ে সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেন। স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েকটি সড়কে যান চলাচল সাময়িকভাবে বিঘ্নিত হয়।

বিক্ষোভের পটভূমি:

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে রাজনৈতিক উত্তেজনা অনেকাংশেই বৃদ্ধি পেয়েছে। তার প্রশাসন চলাকালীন সময়ে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নানা বিষয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত, অভিবাসন নীতি, গণমাধ্যমের প্রতি দমননীতি, এবং বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনের প্রতি প্রতিক্রিয়ার কারণে তীব্র সমালোচনা বেয়ে এসেছে।

২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ট্রাম্পের শাসনশৈলীতে দেশকে একটি ভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক দিশায় এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু সমালোচকরা মনে করেন, তার নীতি ও সিদ্ধান্তসমূহ অনেক সময় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফলে আজও তার প্রতি আস্থা অনেক জনগোষ্ঠীর মধ্যে হ্রাস পেয়েছে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মানুষ ও সংগঠন:

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া জনতার মধ্যে রয়েছে ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিক, বিভিন্ন এনজিও কর্মী, এবং সাধারণ নাগরিক। বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনও এই প্রতিবাদে সমর্থন জানায়। বিক্ষোভকারীরা জানান, তারা ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছে।

একজন বিক্ষোভকারী বলেন, “আমরা চাই ট্রাম্প এখনই দায়িত্ব থেকে সরে আসুক। তার শাসনধারা গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমরা আমাদের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার রক্ষার জন্য এখানে এসেছি।”

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া:

ওয়াশিংটন ডিসির পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। যান চলাচল সাময়িকভাবে সীমিত করা হয় এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ভবনের চারপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা বিক্ষোভকে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি। নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।”

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:

ট্রাম্পের শাসন ও তার বিরোধিতাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকগণও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন দেশের বিশ্লেষক মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অস্থিরতা কেবল দেশটিকে নয়, বিশ্ব রাজনীতিকেও প্রভাবিত করতে পারে।

বিশ্লেষণ:

বিশ্লেষকরা মনে করেন, ট্রাম্পের পদে থাকা ও তার চলমান নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ একটি দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক আন্দোলনের সূচনা হতে পারে। গণতন্ত্র রক্ষা ও নাগরিক অধিকার রক্ষার দাবি নিয়ে এই ধরনের আন্দোলন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।

সমাজে প্রভাব:

বিক্ষোভের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেই সামাজিক মাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই বিক্ষোভের খবর শেয়ার করেছেন। এছাড়া, বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও এটি রাজনৈতিক আলোচনার নতুন সূত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার বর্ষপূর্তিতে ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন দিক উন্মোচিত করেছে। মানুষ তাদের অধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য শক্তভাবে অবস্থান নিয়েছে। ট্রাম্পের নীতি ও কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত আন্দোলনের সূচনা করতে পারে।

MAH – 13652 I Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button