বিশ্ব

নতুন চুক্তি সই করছে ভারত-ইসরাইল

Advertisement

ভারত-ইসরাইলের কৌশলগত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায়

ভারত এবং ইসরাইলের মধ্যে সাম্প্রতিক কালে কৌশলগত, প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সা’আর সম্প্রতি জানান, দুই দেশ একটি নতুন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরের পথে। এটি কেবল প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নয়, বরং প্রযুক্তি, কৃষি, সন্ত্রাস দমন এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতাকেও আরও দৃঢ় করবে।

ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “ভারতকে আমরা বৈশ্বিক পরাশক্তি হিসেবে দেখি। দুই দেশের গণতন্ত্রের মধ্যে সম্পর্ক এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী।” তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রতিরক্ষা, কৃষি এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতায় অগ্রসর হচ্ছি, তবে আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর করার জন্য সবসময়ই আন্তরিক আগ্রহ রয়েছে।”

প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা

ভারত ও ইসরাইলের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নতুন কোনো বিষয় নয়। দুই দেশ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন উচ্চ প্রযুক্তির অস্ত্র ব্যবস্থা, ড্রোন প্রযুক্তি, রাডার সিস্টেম এবং নিরাপত্তা প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নতুন সমঝোতা স্মারক ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে। এছাড়াও, সন্ত্রাস মোকাবেলা এবং সীমান্ত নিরাপত্তায় এই সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ইসরাইলি কর্মকর্তারা বলছেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি, সীমান্ত নজরদারি ও কৌশলগত প্রস্তুতিতে নতুন দিকনির্দেশনা নিয়ে কাজ করছি।”

কৃষি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রসার

প্রতিরক্ষা খাতের পাশাপাশি, ভারত-ইসরাইল সম্পর্ক কৃষি ও অর্থনৈতিক খাতেও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইসরাইল কৃষি প্রযুক্তিতে বিশ্বের অন্যতম অগ্রণী দেশ। তাদের ড্রিপ ইরিগেশন, জল সংরক্ষণ প্রযুক্তি এবং ফসল উৎপাদন কৌশল ভারতের কৃষিখাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।

দুই দেশের বাণিজ্যও গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসরাইলি বিনিয়োগকারীরা ভারতের প্রযুক্তি ও স্টার্টআপ খাতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন, বিশেষ করে রোবোটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ড্রোন প্রযুক্তিতে।

সন্ত্রাস দমন ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতা

ইসরাইল এবং ভারত উভয়ই সন্ত্রাসবাদের মুখোমুখি। দুই দেশের মধ্যে সন্ত্রাস দমন, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় এবং কৌশলগত প্রশিক্ষণ নিয়ে সহযোগিতা নতুন মাত্রা পাবে।

পররাষ্ট্র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “দুই দেশের যৌথ উদ্যোগ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস দমন এবং অঞ্চলে স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

ভারত ও ইসরাইলের সম্পর্ক রাজনৈতিকভাবে ও কূটনৈতিকভাবে দীর্ঘমেয়াদীভাবে দৃঢ়। উভয় দেশই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সমমনা।

গ্লোবাল পলিসি বিশ্লেষকরা বলছেন, “ভারত-ইসরাইল সম্পর্ক কেবল কৌশলগত নয়, বরং অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। বিশেষত প্রতিরক্ষা খাতে এই সমঝোতা স্মারক দুই দেশের কৌশলগত স্বার্থকে সমর্থন করবে।”

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

নতুন সমঝোতা স্মারক নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা প্রেক্ষাপটে এটি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারত-ইসরাইলের এই যৌথ উদ্যোগ আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বাজারে একটি নতুন দিশা দেখাবে।

SignalBD-এর বিশ্লেষণ

SignalBD বিশ্লেষণে দেখা যায়, নতুন সমঝোতা স্মারক ভারতের কৌশলগত ক্ষমতা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষত, সীমান্ত নিরাপত্তা, সন্ত্রাস দমন, প্রযুক্তি এবং কৃষিখাতে এই সহযোগিতা দু’দেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদী লাভজনক হবে।

এছাড়াও, ভারতের “Make in India” উদ্যোগ এবং ইসরাইলি প্রযুক্তি বিনিয়োগের সংমিশ্রণ, ভারতকে প্রযুক্তিগতভাবে আরও স্বনির্ভর করবে।

ভারত এবং ইসরাইলের সম্পর্ক নতুন দিগন্তে পৌঁছাচ্ছে। প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি, কৃষি, অর্থনীতি ও সন্ত্রাস দমন—এই সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা তাদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করছে। নতুন সমঝোতা স্মারক শুধু কৌশলগত নয়, বরং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

দুই দেশের জন্য এটি কেবল একটি কূটনৈতিক উদ্যোগ নয়, বরং ভবিষ্যতের নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির একটি শক্ত ভিত্তি। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ভারত-ইসরাইলের এই সহযোগিতা আগামী কয়েক বছরে আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক কৌশলগত মানচিত্রে নতুন ছাপ ফেলবে।

MAH – 13632 I Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button