বিশ্ব

ট্রাম্পের পরমাণু আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, খামেনি বললেন ‘স্বপ্ন দেখতে থাকো’

Advertisement

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন পরমাণু আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। খামেনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো দেশকে পরমাণু শক্তিধর হবে কি হবে না তা নির্ধারণ করার অধিকার নেই। তিনি ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলেন, “স্বপ্ন দেখতে থাকো।”

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার নামে বারবার নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি এও উল্লেখ করেন, পূর্বের সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।

ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ

খামেনি সোমবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, কোনো দেশ নিজের ইচ্ছায় পরমাণু শক্তিধর হবে কি হবে না, তা অন্য কোনো দেশের অধিকার নয়। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে বলেন, “তাদের দাবি যে তারা ইরানের পারমাণবিক শিল্পকে ধ্বংস করেছে, তা একেবারেই ভিত্তিহীন।”

তিনি ট্রাম্পের আলোচনার প্রস্তাবকে কূটনৈতিক চাপের প্রচেষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করেন। খামেনি বলেন, “যদি কোনো চুক্তি জোরপূর্বক চাপিয়ে দেয়া হয় বা পূর্বনির্ধারিত ফলাফলের দিকে নিয়ে যায়, তা কোনো চুক্তি নয়।”

ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েনে রয়েছে। গত জুনে পারমাণবিক স্থাপনা নিয়ে পরোক্ষ আলোচনার পর, ইসরাইল এবং যুক্তরাষ্ট্র ইরানের স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়।

খামেনি এও উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল গাজায় যুদ্ধাপরাধের জন্য সরাসরি জড়িত। তিনি বলেন, এসব হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং আঞ্চলিক শান্তি বিনষ্ট করে।

রাশিয়ার অবস্থান

পরমাণু ইস্যুতে ইরানের পাশে অবস্থান নিতে প্রস্তুত রাশিয়া। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার মন্তব্য করেন, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ অনৈতিক। রাশিয়ার এই মনোভাব ইরানের কূটনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়ার সমর্থন ইরানের জন্য আন্তর্জাতিক চাপের মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

খামেনির ঘোষণার ফলে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে, মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা এবং পারমাণবিক সমঝোতার ক্ষেত্রে এর প্রভাব পরিলক্ষিত হবে।

মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইরানের দৃঢ় অবস্থান এবং রাশিয়ার সমর্থন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রকে কূটনৈতিকভাবে চাপের মুখোমুখি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষণ

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খামেনির প্রতিক্রিয়া শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি ইরানের আত্মনির্ভরশীল কৌশলকেও প্রতিফলিত করে। তারা মনে করেন, ইরানের এই অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে শক্তির ভারসাম্য এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, ট্রাম্পের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান এবং রাশিয়ার সমর্থন ইরানকে পারমাণবিক সক্ষমতা সংক্রান্ত আলোচনায় শক্ত অবস্থান প্রদান করেছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির ট্রাম্পকে ‘স্বপ্ন দেখতে থাকো’ বলা মন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের পারমাণবিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে নতুন দিকনির্দেশনা দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনার পরবর্তী ধাপ নির্ভর করবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক পদক্ষেপের ওপর।

এম আর এম – ১৮৮৬,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button