বানিজ্য

ব্রাজিলের পণ্যে ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক: নতুন সংকটের মুখোমুখি

Advertisement

ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যিক উত্তেজনা

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। গত ৩০ জুলাই, ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ব্রাজিলের কিছু পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গত বুধবার থেকে কার্যকর হয়েছে।

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ

হোয়াইট হাউসের এক ঘোষণায় ব্রাজিল সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দমন-পীড়ন, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হয়রানি ও বিধিনিষেধ আরোপের অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো ও তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে বিচারিক ব্যবস্থা গ্রহণ মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। এই পদক্ষেপ ব্রাজিলে আইনের শাসনকে দুর্বল করে দিয়েছে।

লুলার প্রতিক্রিয়া

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে ‘অগ্রহণযোগ্য ব্ল্যাকমেল’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা ট্রাম্পের শুল্ক মোকাবিলায় পশ্চিমা যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি সামর্থ্য রাখি।”

বাণিজ্যিক প্রভাব

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ১২ শতাংশ পণ্য রপ্তানি করে, অন্যদিকে চীনে রপ্তানি করে প্রায় ২৮ শতাংশ পণ্য। এই কারণে, ট্রাম্প প্রশাসনের উচ্চ শুল্ক মোকাবিলায় ব্রাজিলের জন্য পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে সহজ হতে পারে।

ট্রাম্পের বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাব

ট্রাম্পের নতুন শুল্ক ঘোষণার পর লুলা জানিয়েছেন, ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে প্রস্তুত। তবে তিনি বলসোনারোকে নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যকে অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন।

বলসোনারোর গৃহবন্দী

এদিকে, গত সোমবার ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারক সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোকে গৃহবন্দী করার নির্দেশ দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় এই আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই আদেশের ফলে বলসোনারো ও আদালতের মধ্যে টানাপোড়েন আরও বাড়ল।

অর্থমন্ত্রীর আলোচনা

ব্রাজিলের অর্থমন্ত্রী ফার্নান্দো হাদাদ জানিয়েছেন, তিনি আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন। এই আলোচনায় ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক নিয়ে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে।

হাদাদ সাংবাদিকদের বলেন, “আগামী বুধবার (বেসেন্টের) আলোচনা হবে। আলোচনায় অগ্রগতি হলে, পরবর্তী সময়ে আমাদের মধ্যে সরাসরি বৈঠক হতে পারে।”

ব্রাজিলের পণ্যে ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক আরোপের ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর গভীর প্রভাব পড়তে পারে। লুলা সরকারের প্রতিক্রিয়া এবং ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান এই সংকটকে আরও জটিল করে তুলেছে। ভবিষ্যতে এই পরিস্থিতি কিভাবে পরিবর্তিত হবে, তা দেখার জন্য সবার নজর থাকবে।

MAH – 12176 ,  Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button