বিশ্ব

পশ্চিম তীর থেকে ১৯ ফিলিস্তিনিকে তুলে নিয়ে গেছে ইসরাইলি বাহিনী

Advertisement

পশ্চিম তীরের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসরাইলি বাহিনীর অভিযান ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে।

ইসরাইলি বাহিনী পশ্চিম তীরের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে ১৯ জন ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে। ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা সূত্রে জানা গেছে, নাবলুস শহরে ছয়জন, বেথলেহেম ও নাবলুস থেকে নয়জন, হেবরন ও রামাল্লা থেকে দুজন করে গ্রেপ্তার হন। এই গ্রেপ্তারির মধ্যে একটি পরিবারের ছয় সদস্যও রয়েছেন।

ফিলিস্তিনি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধে ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসন শুরুর পর থেকে পশ্চিম তীরে ১৮,০০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই গ্রেপ্তারির মধ্যে অনেকেই প্রশাসনিক আটকাদেশে রয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ নেই।

অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা বৃদ্ধি

ইসরাইলি অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর সহিংসতা বৃদ্ধি করেছে। রামাল্লায় ফিলিস্তিনি গাড়িতে পাথর নিক্ষেপ ও পানি সরবরাহের পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। জেরিকোতে ফিলিস্তিনি কৃষিজমি ধ্বংস করা হয়েছে। জুলাই মাসে পশ্চিম তীরে ৪৬৬টি বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণ ঘটেছে, যার ফলে চারজন নিহত ও দুটি বেদুইন সম্প্রদায়ের ৫০টি পরিবারকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়েছে।

মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পশ্চিম তীরে অন্তত ১,০১৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৭,০০০-এরও বেশি আহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ২০২৪ সালের জুলাই মাসে একটি পরামর্শমূলক রায়ে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের দখল অবৈধ এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে সকল বসতি কেন্দ্র খালি করার আহ্বান জানিয়েছে।

ইসরাইলি মন্ত্রী মারওয়ান বারঘৌতির সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাৎ

১৫ আগস্ট ২০২৫ তারিখে ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনি নেতা মারওয়ান বারঘৌতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এই সাক্ষাৎকারে বেন-গভির বারঘৌতিকে হুমকি দেন এবং বলেন, “তুমি জিতবে না”। বারঘৌতি, যিনি দ্বিতীয় ইনতিফাদায় ইসরাইলি নাগরিকদের বিরুদ্ধে আক্রমণের জন্য পাঁচটি আজীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন, ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একটি ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্বের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হন। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এটিকে বারঘৌতির প্রতি হুমকি হিসেবে দেখছে।

আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতিক্রিয়া

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও আন্তর্জাতিক রেড ক্রস পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ব্যাপক গ্রেপ্তার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই সংস্থাগুলো প্রশাসনিক আটকাদেশের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের দীর্ঘ সময় ধরে আটক রাখার প্রক্রিয়াকে অবৈধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর গ্রেপ্তারি অভিযান ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করা।

MAH – 12382 ,  Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button