বিশ্ব

অস্ট্রিয়ায় স্কুলে বন্দুকধারীর হামলায় ১১ জন নিহত

হামলার ঘটনা ও সময়কাল

১০ জুন ২০২৫, সকাল ১০টার দিকে অস্ট্রিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গ্রাজের BORG Dreierschützengasse উচ্চ বিদ্যালয়ে এক প্রাক্তন ছাত্র গুলি চালিয়ে অন্তত ১০ জনকে হত্যা করেন এবং প্রায় ১২ জনকে আহত করেন। হত্যাকাণ্ডের পর বন্দুকধারী স্কুলের বাথরুমে গিয়ে আত্মহত্যা করেন, ফলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১১ জনে ।

নিহত ও আহতদের বিবরণ

  • নিহত: ঘটনাস্থলেই ছয় নারী ও তিন পুরুষ নিহত হন, পরে হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়। বন্দুকধারীসহ মোট মৃতের সংখ্যা ১১ জন ।
  • আহত: অন্তত ১২ জন গুরুতর আহত এবং এদের মধ্যে দুই-তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ।

বিক্ষিপ্ত তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে কয়েকজনই ছাত্র–ছাত্রী এবং শিক্ষক রয়েছেন। আহতদের দ্রুত গ্রাজের নিকটস্থ কয়েকটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

হামলাকারীর পরিচয় ও মুড

পুলিশ জানায়, বন্দুকধারীর বয়স ছিল ২১ বছর, তিনি স্থানীয় এক ফরেইনেসে ছাত্র ছিলেন এবং BORG Dreierschützengasse স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ।

  • অস্ত্র: পুলিশের দাবি, দুষ্কৃতী ঐ ছাত্রী ও স্থানীয় আদালতে তার বৈধ মালিকানাধীন লং গান এবং হ্যান্ডগান নিয়েছিলেন ।
  • শাস্তিমানতা: পূর্বে তার কোনো অপরাধমূলক বিরতি বা মানসিক অসুস্থতার ইতিহাস ধরা পড়েনি। বর্তমানে হামলার প্রকৃত কারণ উদঘাটনের জন্য তদন্ত চলছে।

উদ্ধার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

পুলিশ ও স্পেশাল ফোর্স রাতারাতি স্কুল ভবন ঘিরে ফেলে, দ্রুত স্থান খালি করে সুরক্ষা নিশ্চিত করেন । স্থানীয় ফুটবল স্টেডিয়াম ASKÖ-তে একটি
পেরেন্ট রিলিফ সেন্টার গঠন করে আহতদের স্বজনদের জন্য ত্রাণ ও সাপোর্ট সুবিধা চালু করা হয় ।

স্থানীয় প্রতিক্রিয়া ও শোক

  • মেয়র এলকে কাহর: “এটি এক অন্ধকার দিন, আমি নিহতদের পরিবার ও গ্রাজবাসীর প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই” ।
  • স্থানীয় ছাত্র-ছাত্রী: অনেকেই শক ও ভয়ে মানসিক সাপোর্টের জন্য কাউন্সেলার সহায়তা নিচ্ছেন।
  • গ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়: ক্যাম্পাসে নীরবতা পালন ও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে।

জাতীয় শোক ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

  • আমৃত্যু তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক: চ্যান্সেলর ক্রিশ্চিয়ান স্টকার মৃত্যুর পর তিন দিনের শোক ঘোষণা করেন এবং জাতীয় পতাকাকে আধাশোঁড়ানো করার আদেশ দেন ।
  • ভ্যান ডার বেলেন প্রেসিডেন্ট: “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিরাপদ থাকার জায়গা, এ ধরনের ঘটনা হৃদয়বিদারক” উল্লেখ করেন।
  • অন্তরসামরিক মন্ত্রী গেরহার্ড কারনার: “তদন্তে স্পষ্টতা না এলে দেশের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখে” বলে মন্তব্য করেন ।

অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে বিতর্ক

অস্ট্রিয়ার তুলনামূলকভাবে শিথিল বন্দুক আইন নিয়ে দীর্ঘদিন বিতর্ক চলছিল। 이번 ঘটনার পর:

  • কঠোর পর্যালোচনা: সরকার তারলীন লাইসেন্স নীতি পুনর্বিবেচনা করতে পারে: আবেদন প্রক্রিয়া, মানসিক স্বাস্থ্যের পরীক্ষাকে আরো জোরদার করা হবে।
  • দাবি: মানবাধিকার, স্কুল নিরাপত্তা সংগঠন থেকে কঠোর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ব্যাখ্যা চাওয়া হচ্ছে asisonline.org
  • প্রতিরোধ: বিপুল নিরাপত্তা চেকপোস্ট, স্কুলগুলিতে মেটাল ডিটেক্টর স্থাপন নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে।

পরবর্তী ধারাবাহিকতা

১. তদন্ত: ফেডারেল নিরাপত্তা বিভাগ ও স্থানীয় সাইবার ইউনিট হামলার পেছনের মানসিক প্রোফাইল এবং অনলাইন কমিউনিটি চেক করছে।
২. পুনর্বাসন: আহতদের চিকিৎসার পাশাপাশি বেঁচে যাওয়া শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিং সাপোর্ট চালু হয়েছে।
৩. আইনি ব্যবস্থা: বন্দুক মালিকানা ও শাখা অধিকার নিয়েও সরকারী কমিটি রিপোর্ট দাখিল করবে আগামী মাসে।
৪. অন্তর্জাতিক সমালোচনা: ইউরোপীয় কমিশন স্কুল নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নীতিমালা শেয়ার করতে আহ্বান জানিয়েছে ।

গ্রাজের BORG Dreierschützengasse স্কুলে হামলা অস্ট্রিয়ার আধুনিক সময়ের সবচেয়ে নৃশংস ঘটনা। এ ঘটনায় ১১ জন প্রাণ হারিয়েছেন ও অসংখ্য পরিবার ঝলসে গেছে। যদিও বন্দুকধারী আত্মহত্যা করায় আদৌ বিচার হবে কি না তা অনিশ্চিত, তবে দেশ তথা ইউরোপ আবারো অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, স্কুল নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে গভীর চিন্তায় নামল। ভবিষ্যতে এসব নীতিমালা কতটা দৃষ্টান্তমূলক হবে, তা নির্ভর করছে জাতীয় ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ ও দ্রুত আইনি সংস্কারের উপর।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button