বাংলাদেশ

পাকিস্তানে যেতে ভিসা লাগবে না অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক এবং অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য পারস্পরিক ভিসা অব্যাহতি চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। এই সিদ্ধান্তের ফলে দুই দেশের কূটনৈতিক ও সরকারি কর্মকর্তারা এখন ভিসা ছাড়াই একে অপরের দেশে প্রবেশ ও অবস্থান করতে পারবেন।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) উপদেষ্টা পরিষদের ৩৯তম বৈঠকে এই খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ এই বিষয়ে প্রাথমিক উদ্যোগ নিয়েছিল। অনুমোদিত খসড়া অনুযায়ী, দুই দেশের কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীরা সরাসরি একে অপরের দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন।

ভিসা ব্যবস্থার ইতিহাস

বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে ভিসা নীতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে আসছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা জটিল ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়নের অংশ হিসেবে এই ভিসা অব্যাহতি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আগে শুধুমাত্র কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের সীমিত সুবিধা ছিল, কিন্তু এখন অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীরাও এই সুবিধা পাবেন।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

এই সিদ্ধান্তের ফলে দুই দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে ভ্রমণ সহজ হবে। বিশেষ করে কূটনৈতিক মিশন, সরকারী সফর ও কর্মপরিকল্পনা আরও দ্রুতগতিতে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সাধারণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে এখনও ভিসা বাধ্যতামূলক থাকায় সীমিত প্রভাব পড়বে।

বাংলাদেশে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, এই ধরনের পারস্পরিক সুবিধা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া এসেছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা এই খসড়া অনুমোদন দ্রুত চূড়ান্ত রূপ দিতে আগ্রহী।

আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট ও তুলনা

আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশ কূটনৈতিক এবং সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি নীতি চালু করেছে। যেমন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ কিছু বছর ধরেই এ ধরনের সুবিধা রাখে। এই ধরনের পদক্ষেপ কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও সহজ করে। দুই দেশের মধ্যে এখন এই খসড়া অনুমোদন হলে, ভবিষ্যতে ব্যবসায়ী ও সরকারি সফরেও সুবিধা আসতে পারে।

বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞ মতামত

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত কেবল ভিসা অব্যাহতি নয়, বরং দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। তারা বলছেন, “এই ধরনের পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি করবে এবং সরকারি সফরের প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ হবে।” এছাড়া, কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে সাধারণ নাগরিকদের জন্যও ভিসা নীতি সহজ করার পথ তৈরি হতে পারে।

পরবর্তী ধাপ

এখন খসড়া অনুমোদনের পরে দুই দেশের মন্ত্রিপরিষদ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য কাজ করবে। অনুমোদন সম্পন্ন হলে অফিসিয়াল ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীরা আনুষ্ঠানিকভাবে ভিসা ছাড়া প্রবেশ ও অবস্থান করতে পারবে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক যোগাযোগকে আরও গতিশীল করবে। তবে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্থিতিশীল থাকবে কি না, তা নির্ভর করছে ভবিষ্যতের প্রতিক্রিয়ার ওপর।

এম আর এম – ০৯৮৮, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Advertisement
Back to top button