মেসির ‘সবুজ’ থাকার ক্ষুধা: কেমন সেই ফুটবলের ‘অমরত্ব’

ফুটবল মাঠের ছোট্ট ‘ডি’ বক্সের সামনে দাঁড়িয়ে বল যেনো জীবন্ত হয়ে ওঠে। আর সেই বলের ধনুক বাঁ পায়ের মালিক, যার নাম লিওনেল মেসি—যাকে অনেকে ‘অমরত্ব’র প্রতীক হিসেবে গণ্য করেন। ৩৭ বছর বয়সেও তরুণের মতো ফুটবলে ‘সবুজ’ থাকার তার ক্ষুধা যেন দিনদিন বাড়ছে, এবং সেটা দেখার আনন্দ ফুটবলপ্রেমীদের অজস্র।
সবুজ থাকার নেশা আর ফুটবলের অমরত্ব
মেসির জন্য ফুটবল শুধু খেলা নয়, এটি এক জীবনের ‘সবুজ’ থাকার নেশা। বয়স্ক হলেও তিনি যেন সদ্য ফোটা কুঁড়ি, তরতাজা ফুলের মতো মাঠে ঝলমল করছেন। যেমনটা দেখা গেলো সম্প্রতি আটলান্টায় ক্লাব বিশ্বকাপে পোর্তোর বিপক্ষে ম্যাচে।
ফ্রি-কিক থেকে গোল হবার সময় সেই ঐতিহ্যবাহী বাঁ পায়ের কিক ও বলের বাঁক ফুটবলের ইতিহাসে আরেকটি অনবদ্য মুহূর্ত গড়ল। তারপর শিশু সন্তানের মতো দুহাত ছড়িয়ে আনন্দে ছুটে যাওয়ার দৃশ্যটি যেন প্রমাণ করল—মেসি এখনো ‘সবুজ’, এখনও প্রাণবন্ত।
মেসির কীর্তি: ইতিহাসের পাতায় নতুন অধ্যায়
মেসির ক্যারিয়ার এতটাই মহৎ যে, তার চাওয়া-পাওয়া প্রায় শেষ হয়েছে। কিন্তু এই ‘সবুজ থাকার ক্ষুধা’ই তাকে এখনও মাঠে জ্বালিয়ে রাখে। ২০২৫ সালে মেসির গোল সংখ্যা ২৫টি, যা ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি মার্তাকে পেছনে ফেলে ফেলেছে। এছাড়া, ফিফা আয়োজিত বিভিন্ন টুর্নামেন্ট মিলিয়ে মেসির গোলের রেকর্ড অবিশ্বাস্য—২০ বছরে ৪০ ম্যাচে শীর্ষ গোলদাতা।
ফ্রি-কিকের রাজা: মেসি ও তার চ্যালেঞ্জ
ফ্রি-কিক থেকে গোলের দিক থেকে মেসি ব্রাজিলের কিংবদন্তি খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাল মেলাচ্ছেন। শুধু দুই ব্রাজিলিয়ান জুনিনিও ও পেলের সামনে তিনি আছেন। তবে তার চ্যালেঞ্জ শুরুর আগের থেকে কমে যায়নি। প্রতিটি শট, প্রতিটি গোলেই ফুটবলের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় লেখা হয়।
মেসি—অমরত্বের আলোয়
২০২৬ বিশ্বকাপের পর হয়তো মেসি আর খেলবেন না, এমন গুঞ্জন থাকলেও তার ‘অমরত্ব’ ফুটবল বিশ্বে স্থায়ী হয়ে গেছে। যেভাবে বল পায়ে দৌড়ান, সেভাবে মাঠ মাতিয়ে চলেছেন—সেই কারণে সমর্থকরা তাঁকে ‘ঈশ্বরের স্পর্শধন্য’ বলেও অভিহিত করেন।
মেসির এই সবুজ থাকার ক্ষুধা শুধু গোলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়কে অনুপ্রাণিত করে, আগামীর জন্য এক নতুন ইতিহাসের প্রেরণা হিসেবে কাজ করে।