 
						নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের আগ মুহূর্তে একমাত্র মুসলিম প্রার্থী জোহরান মামদানি এক বিশাল শোডাউনের আয়োজন করেছেন। স্থানীয় সময় রোববার (২৬ অক্টোবর) কুইন্সের ফরেস্ট হিল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ অংশ নেন।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, এতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি, ভারতীয় ও এশীয় ভোটার উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা শহরকে আরও নিরাপদ ও স্বচ্ছ করার বিষয়ে তার প্রতিশ্রুতি শোনেন।
নির্বাচনী প্রচারণা ও সমর্থকরা
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাট সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স এবং কংগ্রেস-ওমেন আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ, যারা প্রকাশ্যে মামদানিকে সমর্থন জানান। মামদানি তার বক্তৃতায় বলেন, “আমরা শহরটিকে দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ ও তাদের ধনকুবের দোসরদের হাত থেকে মুক্ত করব। নিউইয়র্ক সিটি বিক্রির জন্য নয়।”
মামদানি এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করছেন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমো, যিনি প্রাইমারিতে হেরে মূল নির্বাচনে সুযোগ পান।
গেল আগস্টে প্রাইমারিতে হারের পরও মামদানি মূল নির্বাচনে অংশ নেন। প্রাইমারি নির্বাচনে হেরে বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস কুমোর পাশে দাঁড়ান। ফলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেড়ে যায়।
বিভিন্ন নির্বাচনী জরিপ অনুযায়ী, মামদানির সমর্থন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে তিনি সম্ভাব্যভাবে নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র হওয়ার পথে রয়েছেন।
মুসলিম ও বাংলাদেশি ভোটারদের প্রভাব
মামদানির সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বাংলাদেশি কমিউনিটি বিশেষভাবে দৃশ্যমান ছিল। স্থানীয় বিশ্লেষকরা মনে করেন, এশীয় ভোটারদের সমর্থন তার নির্বাচনী প্রার্থীতা শক্তিশালী করছে।
এছাড়া মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য এই নির্বাচনের গুরুত্ব অতুলনীয়। এটি শুধু রাজনৈতিক নয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে নিউইয়র্ক শহরের বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তিকে তুলে ধরে।
প্রতিদ্বন্দ্বী ও নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ
অ্যান্ড্রু কুমো একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। প্রাইমারিতে হারের পরও তার রাজনৈতিক প্রভাব বজায় রয়েছে। তবে জরিপ অনুযায়ী মামদানির সমর্থন অনেকখানি এগিয়ে।
বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র হলেও মামদানির সমর্থক শক্তি তাকে এগিয়ে রাখছে। নির্বাচনী প্রচারণা ও জনসভায় তার উপস্থিতি আরও সমর্থককে প্রলুব্ধ করছে।
নির্বাচনী প্রচারণার মূল বার্তা
মামদানির বক্তব্যের মূল বার্তা ছিল নিরাপদ শহর, দুর্নীতি নির্মূল এবং নাগরিকদের জন্য সুবিচার নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, “শহরের নীতি ও প্রশাসন সকল নাগরিকের জন্য স্বচ্ছ ও ন্যায্য হতে হবে। আমরা সবাইকে একত্রিত করব।”
তাঁর প্রতিশ্রুতি শুধু মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য নয়, সবার জন্য একটি উন্নত ও নিরাপদ নিউইয়র্ক নিশ্চিত করা।
বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক মতামত
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মামদানি নিউইয়র্কের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের প্রতিনিধি হতে পারেন। তার সমাবেশে বিপুল জনসমাগম ও সমর্থনের ভিত্তিতে নির্বাচনী সম্ভাবনা শক্তিশালী।
একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, “মামদানির এই সমাবেশ দেখাচ্ছে, জনগণ পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত। এ ধরনের বিশাল সমাবেশ সাধারণত নির্বাচনের ফলাফলের পূর্বাভাস হিসেবে ধরা হয়।”
নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচনের আগ মুহূর্তে জোহরান মামদানির বিশাল সমাবেশ প্রমাণ করে, তিনি সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়। বাংলাদেশের কমিউনিটি থেকে শুরু করে এশীয় ভোটারদের সমর্থন তাকে নির্বাচনে শক্ত অবস্থানে নিয়ে গেছে।
নির্বাচনের দিন যখন নিকট, সেই উত্তেজনা আরও তীব্র হচ্ছে। যদি সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে থাকে, তিনি সম্ভবত নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হবেন।
এম আর এম – ১৯৬৪,Signalbd.com
 
				 
					


