জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ‘শাপলার বিকল্প হিসেবে শাপলা কলি কেমন দৃষ্টিনন্দন আকৃতির তা আমরা বুঝতে চাই।’ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, এনসিপি সবসময় বলেছে শাপলার কোনও বিকল্প নেই। বিকল্প কেবল শাপলার ভেতর থেকেই হতে হবে। নানারকম শাপলার ডিজাইন প্রস্তাব করা হলেও, নির্বাচন কমিশন শাপলার ভেতর থেকেই ‘শাপলা কলি’কে বিকল্প হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
শাপলা কলি যুক্তির পেছনের প্রেক্ষাপট
নির্বাচন কমিশন বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ‘শাপলা কলি’কে রাজনৈতিক দলের প্রতীক তালিকায় সংযোজন করে। এটি মূলত নির্বাচন বিধিমালা ২০০৮-এর সংশোধনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। এর আগে, সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনে ১১৫টি প্রতীক সংরক্ষণ করা হয়েছিল, যেখানে শাপলা কলি ছিল না।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গত বছর নিবন্ধনযোগ্য দল হিসেবে বিবেচিত হওয়ার পর থেকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দের দাবি জানিয়ে আসছিল। যদিও কমিশনের প্রাথমিক অবস্থান ছিল, শাপলা প্রতীক না দেওয়া, সম্প্রতি এ পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে।
আখতার হোসেনের মন্তব্য ও সামাজিক যোগাযোগ
ফেসবুক পোস্টে আখতার হোসেন লিখেছেন, ‘শাপলা কলি বিকল্প হিসেবে কতটা দৃষ্টিনন্দন আকৃতির হয়েছে, তা আমাদের বুঝতে হবে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, এই প্রক্রিয়ায় এনসিপি সবসময় স্বচ্ছতা এবং যথাযথ আইনি নিয়মাবলীর প্রতি গুরুত্ব দেয়।
এই মন্তব্যে বোঝা যায় যে, দলটি শুধুমাত্র নতুন প্রতীকের নামকরণ নয়, তার ভিজ্যুয়াল ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও গুরুত্ব দিচ্ছে।
প্রতীকের গুরুত্ব ও রাজনৈতিক প্রভাব
শাপলা প্রতীক বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। এটি শুধু একটি নির্বাচনী চিহ্ন নয়, বরং দলের পরিচয় ও ভোটারের মানসিক সংযোগের প্রতীক। শাপলা কলি যুক্ত হওয়ায় এনসিপি আশা করছে, তাদের রাজনৈতিক উপস্থিতি আরও দৃশ্যমান হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন প্রতীকের অন্তর্ভুক্তি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থীদের জন্য নতুন কৌশল তৈরি করবে এবং নির্বাচনী প্রচারণার ধরণ পরিবর্তন করতে পারে। বিশেষ করে গ্রামীণ ও অ-শহুরে অঞ্চলে ভোটারের মনোযোগ আকর্ষণে নতুন প্রতীকের ভিজ্যুয়াল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা
নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে শাপলা কলি অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দেন। এতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য প্রতীকের তালিকা প্রকাশ করা হয়। কমিশন বলেছে, নতুন প্রতীকের সংযোজন ও বিয়োজন নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, শাপলা প্রতীকের জন্য আইনি বাধা নেই এবং নতুন প্রতীক সংযোজনের মাধ্যমে সকল নিবন্ধিত দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রতীক পরিবর্তনের প্রভাব ও জনমত
এনসিপির পক্ষ থেকে শাপলা কলি প্রতীকের দৃষ্টিনন্দনতা যাচাই করার আহ্বান নতুন বিতর্ক ও আলোচনার সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি শুধু প্রতীকের নান্দনিকতা নয়, বরং নির্বাচনী প্রচারণার কার্যকারিতা এবং ভোটারের মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবকেও প্রভাবিত করবে।
শাপলা কলি যুক্ত হওয়ার ফলে প্রার্থীদের প্রচারণায় ভিজ্যুয়াল আইডেন্টিটি ও সৃজনশীল প্রচারণার সুযোগ বাড়বে। এছাড়া, ভোটাররা নতুন প্রতীককে সহজেই চিহ্নিত করতে পারবে, যা ভোটের সময় সঠিক ভোটাধিকার প্রয়োগে সহায়ক হবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও দলীয় পদক্ষেপ
এনসিপি শাপলা কলি প্রতীকের দৃষ্টিনন্দনতা যাচাই করার পরই রাজনৈতিক প্রচারণা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করবে। আখতার হোসেনের মতে, দলের লক্ষ্য হচ্ছে নতুন প্রতীক ভোটারের কাছে পরিচিত করা এবং ভোটের সময় বিভ্রান্তি রোধ করা।
এদিকে, নির্বাচন কমিশন আশা করছে, নতুন প্রতীকের সংযোজন নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও সুশৃঙ্খল করবে। প্রতীক সংযোজনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সব দল সমান সুযোগ পাবে এবং ভোটারদের জন্য ভোটাধিকার আরও সহজতর হবে।
‘শাপলা কলি’ প্রতীকের সংযোজন রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে নতুন রঙে আলোকিত করেছে। আখতার হোসেনের মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, নতুন প্রতীকের দৃষ্টিনন্দনতা যাচাই দলটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপ নির্বাচন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও সমতাভিত্তিক রাখার একটি উদ্যোগ।
এদিকে, নতুন প্রতীকের কার্যকারিতা ও জনপ্রিয়তা যাচাই করে এনসিপি তাদের রাজনৈতিক কৌশল পরবর্তী নির্বাচনের জন্য আরও শক্তিশালী করার দিকে মনোযোগ দেবে।
এম আর এম – ২০২৪,Signalbd.com



