বিইউবিটি ফল ২০২৫ সেমিস্টার ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠান

২০২৫ সালের ফল সেমিস্টারে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি) একটি মনোমুগ্ধকর ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম আয়োজন করেছে। গত ২১ জুলাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন স্পোর্টস কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষা জীবনের সূচনা করেছে, যেখানে একাডেমিক, নৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিকগুলো তুলে ধরা হয়।
বিইউবিটির ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানের প্রধান আয়োজন এবং অংশগ্রহণ
বিইউবিটির ফল-২০২৫ সেমিস্টারে ভর্তি শিক্ষার্থীদের জন্য হওয়া এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামটি ছিল শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের জন্য প্রস্তুত করার এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন এবং নতুন শিক্ষার্থীদের অভ্যর্থনা জানিয়েছেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্য: অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ ছিলেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। তিনি তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া একাডেমিক ও গবেষণার সুযোগ-সুবিধা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে। তিনি বিশেষভাবে গুণগত শিক্ষা, নৈতিকতা ও উদ্ভাবনের গুরুত্বকে গুরুত্ব দিয়ে বলেন, “শিক্ষার্থীরা শুধু জ্ঞানার্জনে নয়, মানবিক গুণাবলী ও নৈতিকতার বিকাশেও মনোযোগী হবে।”
বিশেষ অতিথি অধ্যাপক মো. আবু সালেহের মূল্যবান পরামর্শ
বিইউবিটি ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আবু সালেহ শিক্ষার্থীদের দায়িত্বশীলতা, অধ্যবসায় ও শৃঙ্খলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, “একজন সফল ছাত্র হওয়ার জন্য শুধু একাডেমিক জ্ঞানের বিকাশ নয়, নিজেকে সময়নিষ্ঠ ও দায়িত্বশীল করে গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি।” তার ভাষায়, মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের উচিত নিজেদের ব্যক্তিত্বের উন্নয়ন ঘটানো।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম শওকত আলীর দৃষ্টিভঙ্গি
বিইউবিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম শওকত আলী জানান, বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন একাডেমিক পরিবেশ গড়ে তুলতে কাজ করছে। তার মতে, গবেষণাভিত্তিক শিক্ষা ও আধুনিক পাঠ্যক্রম শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের দক্ষতা অর্জনে সহায়ক হবে। তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য বিইউবিটিকে একটি শিক্ষার্থী-বান্ধব এবং গবেষণাকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা।”
প্রশাসনিক পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ উপস্থিতি
ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন-অর-রশিদ, প্রক্টর, বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের অভ্যর্থনা জানান এবং শিক্ষার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: শিক্ষার্থীদের আনন্দময় সময়
ওরিয়েন্টেশনের দ্বিতীয় পর্বে একটি মনোরম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যেখানে নবাগত শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে তাদের আবেগ, প্রতিভা ও সৃজনশীলতা প্রকাশের সুযোগ পায়। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠানের পরিবেশকে প্রফুল্ল এবং উৎসাহব্যঞ্জক করে তোলে।
বিইউবিটির শিক্ষা ও গবেষণার উচ্চ মান: সামগ্রিক প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি) দেশের অন্যতম গুণগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। এই বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসা, প্রযুক্তি এবং অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে আধুনিক ও প্রাসঙ্গিক শিক্ষা প্রদান করে থাকে। বিইউবিটি নিয়মিত আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত গবেষণার সুযোগ তৈরি করে তাদেরকে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে প্রতিযোগিতার উপযোগী করে গড়ে তোলে।
বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ করে থাকে, যাতে তারা ব্যবসায়িক জগতে সফল হতে পারে। একই সাথে, নৈতিকতা ও সামাজিক দায়িত্বের প্রতি শিক্ষার্থীদের সচেতন করে তোলা বিইউবিটির অন্যতম লক্ষ্য।
কেন বিইউবিটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আদর্শ স্থান?
- আন্তর্জাতিক মানের পাঠ্যক্রম: বিইউবিটির পাঠ্যক্রম আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এবং বর্তমান প্রয়োজন অনুসারে সংশোধিত।
- গবেষণার সুযোগ: শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাপক গবেষণা সুবিধা ও ল্যাবরেটরি রয়েছে।
- প্রফেসর ও শিক্ষকবৃন্দ: উচ্চশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের গাইডেন্স দেন।
- সাংস্কৃতিক ও সহশিক্ষা কার্যক্রম: শিক্ষার্থীরা নানামুখী সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে।
- সুবিধাজনক ক্যাম্পাস পরিবেশ: সুন্দর ও আধুনিক ক্যাম্পাস যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও বিনোদন উভয় ক্ষেত্রে সহায়ক।
বিইউবিটির ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও লক্ষ্য
বিইউবিটি তার শিক্ষার মান উন্নয়নে অবিচল থাকছে। ভবিষ্যতে তারা আরও বেশি গবেষণামূলক প্রজেক্ট চালু করার পরিকল্পনা করছে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়াতে চায়। প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন কেন্দ্রিক নতুন নতুন কোর্স চালু করে তারা শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন, বিইউবিটি আগামী দিনে বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে একটি মডেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে। যেখানে শিক্ষার্থী ও গবেষকরা একসাথে কাজ করবে, যেখানে নৈতিকতা ও গুণগত শিক্ষা সমানভাবে গুরুত্ব পাবে।
শিক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ ও নির্দেশনা
নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম শওকত আলী পরামর্শ দিয়েছেন যে, তারা নিজেকে সময়মত পরিকল্পনা করে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করবে, গবেষণায় উৎসাহিত হবে এবং নৈতিকতার প্রতি অটল থাকবে।
একই সঙ্গে অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজ বলেছিলেন, “শিক্ষার্থীরা যেন নতুন ধারায় নিজেকে গড়ে তুলতে পারে, নিজেদের মধ্যে উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতা বজায় রাখতে পারে, যা ভবিষ্যতের নেতৃত্ব গঠনে সহায়ক হবে।”
সারমর্ম
বিইউবিটির ফল-২০২৫ সেমিস্টারের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাজীবনের সূচনা করেছে। একাডেমিক উন্নয়ন, নৈতিকতা, গবেষণা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সমন্বয়ে বিইউবিটি তাদের শিক্ষার্থীদের একটি প্রফুল্ল ও সমৃদ্ধ শিক্ষাজীবন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক পাঠ্যক্রম ও গবেষণার সুযোগ-সুবিধা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলবে।
নতুন শিক্ষার্থীদের সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ার সুযোগ নিয়ে বিইউবিটি এগিয়ে যাচ্ছে, যেখানে শিক্ষার গুণগত মান, নৈতিক মূল্যবোধ এবং উদ্ভাবনী চিন্তা একসাথে বিকাশ পাবে।