রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সোমবার আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য সংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি জানান, আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠিত হবে এবং ইইউ সেই সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
ইইউ রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য
সভায় মাইকেল মিলার বলেন, বাংলাদেশ এখন রাজনৈতিক পরিবর্তনের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত রাখবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে রাজনৈতিক ঐকমত্য অপরিহার্য।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় ভ্রমণ করে তিনি তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা প্রত্যক্ষ করেছেন। সেই আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও উন্নয়ন সহযোগীদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া একাধিকবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষত নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব ও রাজনৈতিক সংকটের কারণে আস্থা সংকট তৈরি হয়। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের নেয়া সংস্কার কার্যক্রমকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গুরুত্ব সহকারে দেখছে।
ইইউর দৃষ্টিতে সংস্কার মানে শুধু নির্বাচনী প্রক্রিয়া নয়, বরং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক মতপ্রকাশের সুযোগ, মানবাধিকার সুরক্ষা এবং অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির পরিবেশ নিশ্চিত করা।
তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশা
রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে তরুণ প্রজন্মের বিষয়টি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণরা পরিবর্তন চায়, তারা কর্মসংস্থান, স্বচ্ছতা এবং উন্নয়নের স্বপ্ন দেখে। তাই যে কোনো সংস্কার প্রক্রিয়া তরুণদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে কার্যকর হতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে ভবিষ্যতের গণতান্ত্রিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত তরুণদের কণ্ঠস্বর শোনা এবং নীতি প্রণয়নে তাদের ভূমিকা নিশ্চিত করা।
নির্বাচনী প্রস্তুতি ও ইইউর সহযোগিতা
বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলের নজর রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী। রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার জানিয়েছেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি, কারিগরি সহায়তা এবং পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে সহযোগিতা দিতে ইইউ প্রস্তুত।
তার মতে, একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজন হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে।
প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ইইউর এই বার্তায় সরকার ও বিরোধী দল উভয়ের জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা রয়েছে— গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে হলে সংস্কার অপরিহার্য।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে নির্বাচন ঘিরে আস্থা সংকট দূর করতে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন রাজনৈতিক সমঝোতা। ইইউর দিকনির্দেশনা সেই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে। তবে বাস্তবে সংস্কার কার্যক্রম কতটা দ্রুত সম্পন্ন হয়, তা সময়ই বলে দেবে।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা নতুন মোড় নিতে যাচ্ছে আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে। ইইউ রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সংস্কার ও রাজনৈতিক ঐকমত্যকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলো কি সময়মতো সমঝোতায় পৌঁছে একটি অবাধ ও সু
এম আর এম – ১৩৪৮,Signalbd.com



