আঞ্চলিক

লকডাউন দিয়ে হাসিনার বিরুদ্ধে রায় বন্ধ করা যাবে না: রিজভী

Advertisement

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, লকডাউন বা অন্য কোনো অযৌক্তিক পদক্ষেপের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় বন্ধ করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, দেশের জনগণ ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগের চলমান নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং সরকার তার স্বার্থে যেকোনো লকডাউন চালু করলেও তা কাজ করবে না।

রিজভীর বক্তব্যের প্রেক্ষাপট

রিজভী এই মন্তব্য করেন বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ওপর মাসব্যাপী ভিডিও কনটেন্ট প্রতিযোগিতা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তিনি বলেন, দেশে কিছু রাজনৈতিক দল অযৌক্তিক দাবির মাধ্যমে বর্তমান সরকারের অবৈধ কর্মকাণ্ডকে প্ররোচিত করছে।

তিনি উল্লেখ করেন, “অবৈধ ক্ষমতা পুনরুদ্ধার ও বিচার প্রতিহত করতে লকডাউনের নামে মানুষের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। কিন্তু জনগণ এর মধ্যে দিয়ে সরকারের প্রকৃত চরিত্র বুঝতে পারছে।”

লকডাউন ও সরকারের কর্মকাণ্ড

রিজভী অভিযোগ করেন, গত কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে লকডাউনের অজুহাতে সংঘর্ষ সৃষ্টি করা হয়েছে। বাস ও ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে এবং মানুষ হতাহত হয়েছে। তিনি বলেন, এটি আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের স্বভাবের পরিচয়। ক্ষমতায় থাকাকালীন বিভিন্ন ঘটনায় বিএনপির ওপর দোষ চাপানো হয়েছে, এখনও একই পদ্ধতি চালানো হচ্ছে।

রিজভী আরও বলেন, “লকডাউনের আড়ালে সরকার মানুষকে হত্যা ও ভয় তৈরি করছে। এটি কোনো স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়। জনগণ এখন সচেতন এবং তারা জানে কোথায় ন্যায় ও অন্যায়ের রেখা।”

পতিত স্বৈরাচার ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি

তিনি অভিযোগ করেন, দেশের কিছু রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড এই পতিত স্বৈরাচারকে উৎসাহিত করছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট নিয়ে রাজপথে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে, যা সরকারের স্বৈরাচারী ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করছে।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছে। বিরোধী নেতাদের নজিরবিহীন হামলা, মামলা ও রিমান্ডে রাখা হয়েছে। বিএনপির বহু নেতা-কর্মী গুম, খুন ও হত্যার শিকার হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শত শত ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

রিজভীর সমাধানমূলক পরামর্শ

রিজভীর মতে, দেশের চলমান সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এটি দেশের প্রকৃত মালিকানা জনগণের হাতে ফেরাতে সক্ষম। তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মনোনয়ন নিয়ে ভিতরে আলোচনা হতে পারে, তবে বাইরে যেন বিভক্তি দেখা না দেয়। লক্ষ্য হলো ‘ধানের শীষ’-এর বিজয়, যা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত।

তিনি আরও বলেন, জনগণ ইতিমধ্যেই লকডাউন কর্মসূচির মাধ্যমে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাই সরকারের যে কোনো প্রয়াস জনগণকে প্রতিহত করতে সক্ষম হবে না।

প্রতিক্রিয়া ও রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, রিজভীর এই মন্তব্য সরকারের ওপর জনগণের growing চাপের প্রতিফলন। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন সংকটাপন্ন, যেখানে নাগরিকদের মধ্যে উত্তেজনা এবং সরকারের ওপর অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিশ্লেষকরা আরও বলেন, লকডাউন বা অন্যান্য অযৌক্তিক পদক্ষেপের মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করা সম্ভব হলেও জনগণের দীর্ঘমেয়াদী সমর্থন অর্জন করা সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতি বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের জন্য একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক স্ট্যান্ড তৈরি করতে সহায়ক হতে পারে।

রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, লকডাউন বা অন্য কোনো কৌশলগত পদক্ষেপ দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রায় বন্ধ করা সম্ভব নয়। জনগণ সচেতন এবং রাজনৈতিক বাস্তবতা বোঝে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং ভবিষ্যতের নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের উপর নির্ভর করছে যে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে।

এম আর এম – ২২৩৫,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button