খুলনার দাকোপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম স্ট্রোকজনিত কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। দুই দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর সোমবার রাত ৮টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর আকস্মিক প্রয়াণে পুলিশ, সহকর্মী এবং স্থানীয় মানুষরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
মৃত্যুকালে সিরাজুল ইসলামের বয়স হয়েছিল ৪৮ বছর। তিনি বাংলাদেশ পুলিশে পরিদর্শক (বিপি-৮৬১১১৩৪০১৬) পদে কর্মরত ছিলেন এবং রূপসা থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মৃত্যুর ঘটনা ও হাসপাতালে চিকিৎসা
শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় দাকোপ উপজেলার চালনা বাজারের ভাড়া বাড়িতে থাকা অবস্থায় ওসি সিরাজুল ইসলাম স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে জরুরি অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন। দুই দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর সোমবার রাতেই তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন, তবুও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। হাসপাতালের পক্ষ থেকে পরিবারের সঙ্গে সম্পূর্ণ তথ্য ভাগ করা হয়েছে।
পেশাগত জীবন ও অবদান
সিরাজুল ইসলাম বাংলাদেশ পুলিশের একজন নিবেদিত কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি দাকোপ ও রূপসা থানায় দায়িত্ব পালনকালে জনগণকে সেবা দেওয়ার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর সততা, দায়িত্বপরায়ণতা এবং কর্মদক্ষতার জন্য সহকর্মী ও স্থানীয়রা তাঁকে স্মরণ করবেন।
ওসি সিরাজুল ইসলাম বিশেষভাবে নারী ও শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন। বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ এবং সমাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাঁর প্রচেষ্টা প্রশংসনীয় ছিল।
পরিবারের ও সহকর্মীদের শোক
মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর পুলিশ, সহকর্মী এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা শোক প্রকাশ করেছেন। বাফিক্যালি, সহকর্মীরা তাঁকে “নির্ভীক ও দায়িত্বপরায়ণ কর্মকর্তা” হিসেবে স্মরণ করছেন। পরিবারের সদস্যরা গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং বলছেন, তাঁর আকস্মিক মৃত্যু পুরো পরিবারকে শোকমগ্ন করেছে।
স্থানীয়দের কথায়, সিরাজুল ইসলামের ব্যক্তিত্ব ও দায়িত্ববোধ সকলের কাছে প্রেরণার উৎস ছিল।
স্থানীয় ও প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া
দাকোপ উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও স্থানীয় নেতারা পুলিশের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, “ওসি সিরাজুল ইসলাম দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ কর্মকর্তা ছিলেন। তাঁর অবদান কখনও ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়।”
এছাড়া পুলিশ সদর দপ্তর থেকেও শোক বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। সহকর্মীদের মধ্যে তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং তাদের দায়িত্বশীলতা ও সততার প্রতি সম্মান জানানো হয়েছে।
দাকোপ থানার ওসি সিরাজুল ইসলামের আকস্মিক মৃত্যু পুলিশ বিভাগ, সহকর্মী এবং স্থানীয় জনগণের জন্য একটি বড় শোকের ঘটনা। তাঁর অবদান এবং দায়িত্বপরায়ণতা দীর্ঘদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনাগুলো নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা ও সাধারণ জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এম আর এম – ২১৭৭,Signalbd.com



