আঞ্চলিক

নির্বাচিত হলে ‘একটি বন্ধু সংগঠন’সহ সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করবো: জামায়াত আমির

Advertisement

জামায়াত ইসলামের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, নির্বাচিত হলে তারা বিএনপি নির্দেশিত ‘একটি বন্ধু সংগঠন’সহ সকলকে নিয়ে সরকার গঠন করবে এবং দেশের সমন্বিত উন্নয়নে কাজ করবে।

জামায়াত ইসলামের আমির ডা. শফিকুর রহমান বৃহস্পতিবার সিলেট মহানগরে আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে নির্বাচনের পর সরকারের কাঠামো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে তারা রাজনৈতিক বিরোধিতা নয়, বরং দেশের সকল সৎ ও মানবিক শক্তিকে একত্রিত করে সরকার গঠন করবেন।

সমাবেশে জামায়াত আমিরের বক্তব্য

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিএনপির নির্দেশিত একটি বন্ধু সংগঠন ক্ষমতায় গেলে সাধারণ প্রথা অনুযায়ী সরকারের কার্যক্রম চলবে। কিন্তু জামায়াত নির্বাচিত হলে এই সংগঠনসহ সকলকে সঙ্গে নিয়ে দেশ গঠনের কাজে অংশগ্রহণ করবে। তিনি বলেন, “আমরা বিরোধী অবস্থানেও থাকলেও মানবিক ও ভালো কাজে তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবো। এতে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না।”

তিনি আরও বলেন, সরকারে যাওয়ার পর যদি পুরনো কায়দায় কাজ হয়, তবে প্রথমে সতর্কবার্তা দেওয়া হবে। তা কার্যকর না হলে পূর্বের মতোই কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

দলীয় এবং ধর্মভিত্তিক বিভাজন হ্রাস

জামায়াত আমির বলেন, “দেশকে আর দল বা ধর্মভিত্তিকভাবে বিভক্ত হতে দেয়া হবে না। সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। এটি কায়েম হলে দুর্নীতি করার সাহস কেউ পাবে না।” তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

ডা. শফিকুর রহমানের ভাষ্য অনুযায়ী, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য সব রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র একপক্ষীয় শাসন দেশের স্থিতিশীলতা ও প্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিভিন্ন দল নির্বাচনের পর ক্ষমতায় অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সরকার গঠন করেছে। জামায়াত ইসলামের এই ঘোষণা দেশে রাজনৈতিক সংলাপ ও সমন্বয় বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দেয়।

জামায়াত ইসলামের পূর্ববর্তী অবস্থান কখনো একপক্ষীয় সরকারের বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত হলেও, দলটির সাম্প্রতিক মন্তব্যে বোঝা যাচ্ছে যে তারা দেশের স্বার্থে বৃহত্তর ঐক্য রক্ষা করতে আগ্রহী।

রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জামায়াতের এই বক্তব্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সমন্বয় এবং সহমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রাজনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, এই পদক্ষেপ দলের জনসমর্থন বৃদ্ধি করতে এবং বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে সহায়ক হবে।

বিরোধী দলের কৌশলগত কর্মকাণ্ডও এতে প্রভাবিত হতে পারে। বিশেষ করে যদি দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একত্রিত হয়ে সরকারের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে, তবে তা স্থিতিশীল ও বহুপাক্ষিক শাসন ব্যবস্থার সূচনা হতে পারে।

বিশ্লেষক মতামত

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, জামায়াতের এই ধরণের বক্তব্য রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সমন্বয় বৃদ্ধির সংকেত দেয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশের স্থিতিশীলতা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।

একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক জানান, “যদি জামায়াত নির্বাচিত হলে জনগণের স্বার্থ ও সমন্বয়কে সামনে রেখে সরকার গঠন করে, তাহলে এটি দেশের জন্য উন্নয়নমূলক এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।”

সমাজ ও উন্নয়নের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি

ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্য অনুযায়ী, জামায়াত দেশের সমাজ এবং মানবিক কার্যক্রমকে সমর্থন করবে। সকল রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে উন্নয়নের পথ সুগম করা হবে।

তিনি বলেন, দেশের মানুষের কল্যাণ এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা ছাড়া রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন বা শাসন প্রক্রিয়া অর্থহীন।

সিলেটের সমাবেশে জামায়াত ইসলামের আমিরের মন্তব্য রাজনৈতিক সমন্বয় ও বহুপাক্ষিক সরকার গঠনের সম্ভাবনাকে তুলে ধরেছে। নির্বাচিত হলে তারা শুধু দল নয়, দেশের সকল মানবিক শক্তিকে একত্রিত করে সরকারের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বাস্তবে কতটা কার্যকর হবে, তা ভবিষ্যৎ নির্বাচনের ফলাফল ও রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতার উপর নির্ভর করবে।

এম আর এম – ২১২৪,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button