যশোরের ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ারি: ফলজাতীয় পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহারে চার দিনের সময়সীমা
যশোরের ফল ব্যবসায়ীরা ফলজাতীয় পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য চার দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে যদি বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহার না করা হয়, তাহলে বেনাপোল ও ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ফল আমদানি বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর শহরের মনিহার প্রেক্ষাগৃহের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে যশোর ফল ব্যবসায়ী সমিতি এই হুঁশিয়ারি দেয়। এই কর্মসূচিতে পাঁচ শতাধিক আমদানিকারক, আড়তদার ও পাইকারি বিক্রেতা অংশগ্রহণ করেন।
অতিরিক্ত শুল্কের প্রভাব
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, ৯ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ফলজাতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত এসডি (সম্পূরক শুল্ক) এবং টিটিআই (টোটাল ট্যাক্স অন ইনসিডেন্স) ১৭.৪০ শতাংশ বাড়িয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ডলার সংকটসহ বিভিন্ন কারণে ফল ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এর মধ্যে অতিরিক্ত ভ্যাট, এসডি ও টিটিআই বসানোর ফলে ব্যবসায় ধস নামার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বক্তারা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও এনবিআর যদি আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে দেশের অন্যতম স্থলবন্দর বেনাপোল ও ভোমরা দিয়ে যশোরের কোনো আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী ফল আমদানি করবেন না। তারা ফল বিক্রি বন্ধ করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন।
ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ
মানববন্ধনে নুর আলম নামের একজন ব্যবসায়ী বলেন, “ফলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের একটি শ্রেণির মানুষ ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকছেন। রাজস্ব বোর্ড যদি শুল্ক বৃদ্ধি করে, তাহলে পাইকারি ও খুচরা উভয় পর্যায়ের ফল ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।”
ফল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এস এম সাইফুল ইসলাম লিটন বলেন, “মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ফল বেচাকেনা অনেক কমেছে। এনবিআর ফলকে বিলাসী পণ্য আখ্যা দিয়ে ভ্যাট ও শুল্ক বাড়িয়েছে। ফলকে বিলাসী পণ্যের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই আন্দোলন থেকে বলতে চাই, আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাবি না মানলে আমরা কঠোর কর্মসূচি হাতে নেব।”
সমিতির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্য
মানববন্ধনে যশোর ফল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন চুন্নু, সহসভাপতি রবিউল ইসলাম রবু, যুগ্ম সম্পাদক সাহিদুর রহমান এবং সহসাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন। তারা সকলেই ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় একত্রিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
যশোরের ফল ব্যবসায়ীদের এই আন্দোলন দেশের ফল ব্যবসার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। তারা সরকারের কাছে তাদের দাবি তুলে ধরেছেন এবং আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শুল্ক প্রত্যাহার না হলে কঠোর কর্মসূচি নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ফল ব্যবসায়ীদের এই উদ্যোগ দেশের কৃষি ও অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।