আঞ্চলিক

কারাগারে সাবেক সচিব মোহাম্মদ শহীদ খান

ঢাকার শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত। মামলার তদন্তে তাকে আটক রাখার আবেদন করা হয়, এবং আদালতের শুনানির পর সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

গ্রেফতারের ঘটনা

সোমবার বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামানের আদালতে হাজির করা হয় সাবেক সচিব শহীদ খানকে। মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক মো. তৌফিক হাসান তার কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে এই আবেদন মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

শহীদ খানকে গতকাল মধ্যরাতে শাহবাগ থানায় গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন।

মামলা

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণের লক্ষ্যে গত ৫ আগস্ট ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে। এই সংগঠন জাতির অর্জনকে রক্ষা করতে এবং ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে বিভিন্ন প্রস্তুতি নেন।

গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ২৮ আগস্ট সকাল ১০টায়। এরপর সেগুনবাগিচায়, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠান শুরু হয়। ওই সময়ে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। অভিযোগ রয়েছে, তিনি অনুষ্ঠানকে ব্যবহার করে দেশকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান করেছিলেন।

অন্যান্য গ্রেফতারকৃতরা

২৮ আগস্ট ডিআরইউতে অনুষ্ঠান থেকে ১৬ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন), মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, মঞ্জুরুল আলম, কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল, গোলাম মোস্তফা, মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু, মো. জাকির হোসেন, মো. তৌছিফুল বারী খাঁন, মো. আমির হোসেন সুমন, মো. আল আমিন, মো. নাজমুল আহসান, সৈয়দ শাহেদ হাসান, মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, দেওয়ান মোহম্মদ আলী ও মো. আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম।

মামলায় এই সকল ব্যক্তি সাবেক সচিব শহীদ খানের সহযোগিতায় দেশকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে প্ররোচনার অভিযোগে অভিযুক্ত।

সরকারের পদক্ষেপ ও আইনি প্রক্রিয়া

শাহবাগ থানার পুলিশ জানায়, মামলার তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সকল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আদালত এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শহীদ খানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

আইনি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরণের মামলা দেশে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তারা বলছেন, আদালত এবং পুলিশ সঠিকভাবে আইন প্রয়োগ করলে পরিস্থিতি শান্ত থাকবে।

বিশেষজ্ঞ মতামত

আইন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা অত্যন্ত সংবেদনশীল। তারা বলেন, “যে কোনো আইনগত প্রক্রিয়া নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা করা উচিত। এটি দেশের ন্যায়বিচার এবং প্রশাসনিক বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই ধরনের ঘটনা রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি করতে পারে। তাই সরকারের উচিত দ্রুত এবং স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা।

সংক্ষিপ্তসার

সাবেক সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খানকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পর্যবেক্ষণকে কেন্দ্র করে। মামলার তদন্ত চলমান এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া অব্যাহত।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী দিনে আইন প্রয়োগ ও রাজনৈতিক সংলাপের উপর পরিস্থিতির বিকাশ নির্ভর করবে।

এম আর এম – ১২৪৮,Signalbd.com

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button