সিলেট সীমান্তে আরও ৫৩ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ফের পুশ-ইন কৌশল ব্যবহার করে ৫৩ জন বাংলাদেশিকে সিলেটের জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। আজ ১১ জুন বৃহস্পতিবার ভোরে সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁদের আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
আটককৃতদের পরিচয়
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে,
- জৈন্তাপুরের শ্রীপুর ও মিনাটিলা সীমান্ত এলাকা থেকে মোট ৪০ জন আটক করা হয়।
- কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কালাইরাগ সীমান্ত থেকে আটক হন ১৩ জন।
- আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন:
- ১৭ জন পুরুষ
- ১৪ জন নারী
- ২২ জন শিশু
বিজিবি ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হক বলেন,
“আটককৃতদের অধিকাংশই কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার বাসিন্দা। তাঁদের নাম, পরিচয়পত্র যাচাই করে দুটি বিদ্যালয়ে সাময়িকভাবে রাখা হয়েছে।”
কাজের সন্ধানে ভারতে, ফিরলেন ঠেলেই
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, এদের অধিকাংশই কয়েক মাস বা বছর আগে চাকরি বা কাজের খোঁজে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।
তাঁরা ছিলেন দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশসহ বিভিন্ন স্থানে।
বিভিন্ন সময় ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁদের ধরে সীমান্তে এনে জড়ো করে বিএসএফ বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়ে দিচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক নীতিমালার পরিপন্থী।
পূর্বের অনুরূপ ঘটনা
এর আগে, ২৯ মে সিলেটের বিয়ানীবাজার সীমান্ত দিয়ে ২১ জন বাংলাদেশিকে এভাবে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ।
সীমান্তে বিএসএফের এ ধরনের কার্যক্রম নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করা হলেও, পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।
আইনগত প্রক্রিয়া চলছে
আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে:
- তাঁদের নাম-ঠিকানা যাচাই করে
- প্রাথমিক আইনি প্রক্রিয়া শেষে
- পরিবারের কাছে হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা হবে।
মানবাধিকারের প্রশ্নে বিএসএফের ভূমিকা
বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশিদের এভাবে ‘পুশ ইন’ করা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের শামিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন:
- সীমান্ত পারাপার কোনো দেশের নিজস্ব অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, বরং দ্বিপক্ষীয় সম্মতি ও নিরাপত্তার বিষয়।
- নারী ও শিশুসহ ব্যক্তিদের এভাবে পাঠানো নিরাপত্তা ঝুঁকি, মানবিক সংকট এবং রাষ্ট্রীয় অসম্মান সৃষ্টি করে।
সারসংক্ষেপ
বিষয় | বিবরণ |
---|---|
ঘটনা | বিএসএফ কর্তৃক ৫৩ বাংলাদেশিকে সীমান্ত দিয়ে ঠেলে পাঠানো |
স্থান | জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ সীমান্ত, সিলেট |
সময় | ১১ জুন ২০২৫, ভোর |
আটককৃতদের অবস্থা | বিজিবির হেফাজতে, দুটি বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে |
অধিকাংশের ঠিকানা | কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট |
ভবিষ্যৎ ব্যবস্থা | নাম-ঠিকানা যাচাই শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর |