জাতীয়

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প জরুরি পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত

বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অর্থনৈতিক মূল্যায়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই কারণে জরুরি ভিত্তিতে প্রকল্পটি পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির সর্বশেষ অগ্রগতি, খরচ এবং সম্পূর্ণ হওয়ার সময়কাল সম্পর্কে তথ্য দিতে হবে প্রকল্প পরিদর্শকদের।

পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পটি পরিদর্শন করবে। ১০ মার্চ আইএমইডির সমন্বয় সভায় জরুরি ভিত্তিতে প্রকল্পটি পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী মাসে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

অর্থনৈতিক মূল্যায়ন

দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির অগ্রগতি বিবেচনা করে এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনুসারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রকল্পের জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে বিদেশি ঋণ পরিশোধ শুরু হলে তা অর্থনীতির ওপর কী ধরনের চাপ ফেলতে পারে, সেটাও বিবেচনায় থাকবে।

প্রকল্পের খরচ

রূপপুর প্রকল্পে খরচ হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা এবং রাশিয়া থেকে ঋণসহায়তা হিসেবে আসছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা।

নির্মাণ অগ্রগতি

২০২১ সালের অক্টোবরে রূপপুরে প্রথম ইউনিটের ভৌত কাঠামোর ভেতরে চুল্লিপাত্র স্থাপন করা হয়। গত বছরের অক্টোবরে বসানো হয় দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লিপাত্র। ২০২৫ সালের শেষ দিকে উৎপাদনে যেতে পারে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট।

ঋণ পরিশোধের সময়

২০২৭ সাল থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণ পরিশোধ শুরু হবে। তবে বাংলাদেশ এই ঋণ পরিশোধ শুরু আরও দুই বছর পিছিয়ে দেওয়ার জন্য দেনদরবার করছে।

মেগা প্রকল্পের মূল্যায়ন

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মেগা প্রকল্পগুলোর মূল্যায়নের বিষয়টি আলোচনায় আসে। হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, এবং প্রকল্পগুলোর বাস্তব খরচ, বিদেশি ঋণের শর্ত ও মেয়াদ নিয়ে সরকার গঠিত অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি কাজ করছে।

পায়রা সমুদ্রবন্দর প্রকল্প

অন্য একটি মেগা প্রকল্প পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণের অর্থনৈতিক উপযোগিতা নিয়ে বর্তমান সরকার প্রশ্ন তুলেছে। পায়রা বন্দর প্রকল্পের খরচ বর্তমানে ৫ হাজার ২২৮ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, পায়রা বন্দর প্রকল্প অর্থনীতির জন্য বিষফোড়া।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জরুরি পরিদর্শন এবং মেগা প্রকল্পগুলোর মূল্যায়ন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সরকারের এই উদ্যোগগুলো প্রকল্পগুলোর কার্যকারিতা এবং অর্থনৈতিক সুবিধা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button