পদোন্নতি পেলেন ১১৯ সচিবসহ প্রশাসনের ৭৬৪ জন সাবেক কর্মকর্তা

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ৭৬৪ জন সাবেক সরকারি কর্মকর্তাকে ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি দেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এর মধ্যে ১১৯ জন সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। এই পদোন্নতি উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত বিভিন্ন পদে দেওয়া হয়েছে।
পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন
আজ রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে। পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে গ্রেড-১ (সচিবের সমান বেতন গ্রেড) পদে ৪১ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, যুগ্ম সচিব পদে ৭২ জন এবং উপসচিব পদে ৪ জন রয়েছেন। সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কমিটির সুপারিশ
গত ২৪ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পদোন্নতি বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বঞ্চনা নিরসনে গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের আমলে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে সরকারি চাকরিতে নানাভাবে বঞ্চনার শিকার এবং এ সময়ের মধ্যে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য গত ১৬ সেপ্টেম্বর এ কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
আবেদন ও যাচাই-বাছাই
কমিটির প্রধান ছিলেন সাবেক অর্থসচিব এবং বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের সাবেক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক জাকির আহমেদ খান। কমিটি ১০ ডিসেম্বর তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয়। কমিটির কাছে মোট ১ হাজার ৫৪০টি আবেদন জমা পড়েছিল, যার মধ্যে মারা যাওয়া কর্মকর্তাদের পক্ষে ১৯টি আবেদন ছিল। যাচাই-বাছাই করে কমিটি ৭৬৪ জনের ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করে।
পদোন্নতির ধাপ
ওই ৭৬৪ কর্মকর্তার মধ্যে ৯ জনকে চার ধাপ, ৩৪ জনকে তিন ধাপ, ১২৬ জনকে দুই ধাপ এবং ৫৯৫ জনকে এক ধাপ পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল। সেই সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন দেওয়ার পর এখন প্রজ্ঞাপন জারি করল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
আর্থিক সুবিধা
ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তারা পদোন্নতির তারিখ থেকে প্রাপ্যতা অনুযায়ী সব আর্থিক সুবিধা পাবেন। তাঁরা তাঁদের বকেয়া বর্তমান অর্থবছরে ৫০ শতাংশ এবং বাকি ৫০ শতাংশ পরবর্তী অর্থবছরে (২০২৫-২৬) পাবেন।
এই পদোন্নতি সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি তাদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনা দূর করবে এবং তাদের কর্মজীবনে নতুন উদ্যম নিয়ে আসবে। সরকারের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়, যা প্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মকর্তাদের মনোবল বাড়াতে সহায়তা করবে।