জাতীয়

সেনাপ্রধানের আহ্বান: দেশের স্বার্থে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ

Advertisement

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান দেশের স্বার্থে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার জন্য সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনাবাহিনীর প্রত্যেক সদস্যকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং প্রয়োজনে জীবন উৎসর্গ করতেও প্রস্তুত থাকতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারের শহীদ এম আর চৌধুরী প্যারেড গ্রাউন্ডে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১৭তম ‘কর্নেল অব দ্য রেজিমেন্ট’ অভিষেক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সেনাবাহিনীর আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি

সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, “সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে আমরা আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর এবং যুদ্ধোপযোগী সরঞ্জাম ও অস্ত্র সংযোজন করছি। ইতোমধ্যে ইঞ্জিনিয়ার্স ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রির কাজও চলমান রয়েছে। সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণে আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বর্তমানে যে সক্ষমতা অর্জন করেছে, তা দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও সুদৃঢ় করেছে। আধুনিক অস্ত্র ও সরঞ্জামের সংযোজনের ফলে সেনাবাহিনী একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম।”

ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ঐতিহ্য এবং বীরত্ব

অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের গৌরবময় ইতিহাস এবং সদস্যদের বীরত্বের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট দেশের জন্য সবসময় নিবেদিতপ্রাণ। এই রেজিমেন্টের প্রত্যেক সদস্য তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সর্বোচ্চ নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে। প্রয়োজনে তারা দেশের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতেও পিছপা হয় না।”

অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১৭তম ‘কর্নেল অব দ্য রেজিমেন্ট’ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এটি সামরিক রীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই পদে দায়িত্বগ্রহণের মাধ্যমে তিনি রেজিমেন্টের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেন।

আনুষ্ঠানিকতার বর্ণনা

সকালে সেনাপ্রধান যখন প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছান, তখন সামরিক রীতি অনুযায়ী তাকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। পরে সেনাপ্রধান প্যারেড পরিদর্শন করেন।

অনুষ্ঠান শেষে তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৩৭তম বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলন উদ্বোধন করেন। এ সময় সেনাবাহিনীর আধুনিক প্রশিক্ষণ এবং সদস্যদের পেশাদারিত্ব বাড়ানোর ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের আধুনিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে এবং সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে।”

সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান

সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি উদ্দীপনামূলক আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “যেকোনো পরিস্থিতিতে দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “সেনাবাহিনীর সদস্যদের দক্ষতা ও বীরত্বের ওপর দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নির্ভর করে। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আপনাদের প্রতিটি পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ।”

উপস্থিতি ও সামরিক কর্মকর্তাদের ভূমিকা

অনুষ্ঠানে সেনা সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের প্রতিনিধিরা এবং ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বিভিন্ন পদমর্যাদার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানের গুরুত্ব বাড়িয়ে তোলে।

সেনাপ্রধানের এই বক্তব্য সেনাবাহিনীর সদস্যদের মনোবল বাড়ানোর পাশাপাশি দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে। আধুনিকায়ন ও পেশাদারিত্বের ওপর জোর দিয়ে সেনাপ্রধান দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতি তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button