জাতীয়

করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮

Advertisement

সারাদেশে আবারও বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং নতুন শনাক্ত ৮ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২.৫১%। চলতি বছরে মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ জনে।

করোনা সংক্রমণের বর্তমান চিত্র

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (৭ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৩৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষার বিপরীতে ৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়, যা মোট নমুনার তুলনায় ২ দশমিক ৫১ শতাংশ।

এই সময়ের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে, যা এই বছরের মোট মৃতের সংখ্যা নিয়ে গেছে ২৫-এ। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই রাজধানী ঢাকা এবং তার আশপাশের অঞ্চল থেকে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সংক্রমণের গতি

২০২০ সালে প্রথমবারের মতো দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর কয়েকটি ঢেউয়ে বিপুলসংখ্যক মানুষ আক্রান্ত ও নিহত হন। টিকা কার্যক্রম এবং স্বাস্থ্যবিধি মানার মাধ্যমে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও মাঝে মাঝে সংক্রমণ আবারও বাড়ছে।

২০২৫ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশে মোট ৬৫১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে নারী ১৩ জন এবং পুরুষ ১২ জন মারা গেছেন।

সর্বমোট দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বর্তমানে ২০ লাখ ৫২ হাজার ১৯৬ জনে পৌঁছেছে এবং মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৫২৪ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সতর্কতা ও পরামর্শ

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, করোনা পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। হঠাৎ করে শনাক্তের হার বাড়া মানে নতুন সংক্রমণের ঢেউয়ের পূর্বাভাস হতে পারে।

জনসাধারণকে মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোয়া, ভিড় এড়িয়ে চলা এবং অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া, টিকা নেওয়া হয়নি এমন ব্যক্তিদের দ্রুত টিকা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।

হাসপাতাল প্রস্তুতি ও চিকিৎসা ব্যবস্থা

বর্তমানে অধিকাংশ সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে করোনার জন্য আলাদা ইউনিট চালু নেই, তবে প্রয়োজন পড়লে জরুরি ভিত্তিতে সেই ইউনিটগুলো পুনরায় চালু করা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

মৃত্যুবরণকারী রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই আগে থেকেই বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন, যার ফলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল ছিল। এ কারণে বার্ধক্য ও অসুস্থ ব্যক্তিদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করোনা ভাইরাস এখন আর আগের মতো প্রাণঘাতী না হলেও এটি একেবারে চলে যায়নি। বরং এটি একটি “এন্ডেমিক” রোগে রূপান্তরিত হচ্ছে, যা মাঝেমধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে দেয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ বলেন:

“এই মুহূর্তে যেহেতু শনাক্তের হার বেড়েছে, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা এখনো কমেনি।”

ভবিষ্যৎ করণীয় ও সতর্কতা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করলে সরকার প্রয়োজন অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে, যেমন — স্কুল বন্ধ, জনসমাগম সীমিত করা এবং মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা।

জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজে সচেতন হওয়াটাই হলো সবার জন্য প্রধান করণীয়।

সংক্ষিপ্ত সারসংক্ষেপ 

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ফের বাড়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং নতুন করে ৮ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সাম্প্রতিক করোনা পরিসংখ্যানে বোঝা যাচ্ছে, সংক্রমণের ঝুঁকি এখনো পুরোপুরি কাটেনি। স্বাভাবিক জীবনযাপন বজায় রাখতে হলে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ এবং সচেতনতা অপরিহার্য।
তবে প্রশ্ন থেকে যায় — আমরা কি আবারও আগের সেই বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছি, নাকি সময়মতো সতর্ক হয়ে রক্ষা পেতে পারব?

এম আর এম – ০২২৮, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button