জাতীয়

দেশে একদিনে নতুন করে ২৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত

গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯৯টি নমুনা পরীক্ষায় ২৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯৯ জন। যদিও এ সময় কারও মৃত্যু হয়নি, তবে জনসচেতনতার ওপর জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মোট ৪৯৯টি নমুনা পরীক্ষায় এই রোগীদের শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে চলতি বছরে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৯৯ জনে।

ঘোষণার বিস্তারিত 

আজ বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আজ বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ২৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়।

এ সময়ে কেউ মারা না গেলেও, চলতি বছর এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ১৯ জন। সবশেষ গত সোমবার তিনজনের মৃত্যু হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, শনাক্তের হার ৫ দশমিক ২১ শতাংশ, যা আগের কিছু সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বেশি। তবে মোট সুস্থতার হার এখনো আশাজনক, ৯৮ দশমিক ৪১ শতাংশ।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম একজনের মৃত্যু হয় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। দীর্ঘ তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে।

বাংলাদেশেও এ পর্যন্ত করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৫১৮ জনের। আর মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২০ লাখ ৫২ হাজার ৪৪ জন।

তবে টিকাদান কার্যক্রম এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপের ফলে এখন সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও পরামর্শ 

সংক্রমণ কমলেও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলছেন, ‘বায়ুবাহিত সংক্রমণ’ হওয়ায় ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এখনো ঝুঁকি থেকে যায়।

বিশেষত যেসব ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, বয়স্ক নাগরিক, কিংবা দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় ভোগা মানুষদের জন্য করোনা এখনো ঝুঁকির বিষয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সবাইকে মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়া এবং জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়া প্রয়োজন ছাড়া হাসপাতালে না যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

পরিসংখ্যান 

এ বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত (২৫ জুন পর্যন্ত) মোট ৬,৯৪৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৯৯ জন করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন, যা প্রায় ৭.১৮ শতাংশ শনাক্তের হার নির্দেশ করে।

করোনাভাইরাসে এ বছর মৃত্যুর সংখ্যা ১৯ জন হলেও আগের বছরের তুলনায় এটি অনেক কম। ২০২১ ও ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল হাজারের উপরে।

পরিসংখ্যান বলছে, নারী রোগীদের মধ্যে সংক্রমণের হার কিছুটা বেশি। তবে মৃত্যুহার নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই প্রায় সমান।

বিশেষজ্ঞ মতামত ও বিশ্লেষণ 

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট এখনও মারাত্মক রূপ নিতে পারে। যদিও বর্তমানে শনাক্ত হওয়া বেশিরভাগ রোগীই মৃদু লক্ষণযুক্ত, তবুও এটি হেলাফেলার বিষয় নয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, “ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলেও মানুষের মধ্যে সচেতনতা কমে গেলে সংক্রমণ আবার বেড়ে যেতে পারে। বর্ষাকালে সাধারণ ঠান্ডা-কাশির সঙ্গে করোনা মিশে গেলে আলাদা করা কঠিন হয়।”

সারসংক্ষেপঃ  

করোনা এখন আর আগের মতো ভয়াবহ মহামারি রূপে নেই, তবে বিপদ পুরোপুরি কাটেনি। প্রতিদিন কিছুসংখ্যক রোগী শনাক্ত হওয়াই প্রমাণ করে যে ভাইরাসটি এখনো সক্রিয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ।

তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি আবারও উদাসীন হয়ে যাচ্ছি? যদি তাই হয়, তাহলে ছোট্ট এই সংখ্যা আবার বড় রূপ নিতে কতক্ষণ?

এম আর এম – ০০৪৬, Signalbd.com

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button