টানা ১০ দিন সরকারি ছুটির পর অফিস শুরু, ঈদুল আজহার ছুটি শেষে ফিরছে কর্মজীবীরা

ঢাকা, ১৪ জুন ২০২৫: পবিত্র ঈদুল আজহার শুভ উপলক্ষে ঘোষিত টানা ১০ দিনের সরকারি ছুটি শেষ হয়ে আজ রোববার (১৪ জুন) থেকে দেশের সব সরকারি অফিস খুলে গেছে। ৫ জুন থেকে শুরু হওয়া এই দীর্ঘ ছুটি শেষ হওয়ার পর সরকারি কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করেছেন।
ঈদের ছুটির বিস্তারিত ও তার প্রভাব
সরকারের প্রথম ঘোষণা অনুযায়ী, পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি ছিল ৫ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত। তবে অন্তর্বর্তী সরকার এই ছুটির মেয়াদ বাড়িয়ে ১০ দিন করেছেন। ফলে ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সরকারি অফিস বন্ধ ছিল। এই দীর্ঘ সময়কাল সরকারি কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষ পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন।
ঈদের ছুটির আগে ১৭ মে এবং ২৪ মে, দুই শনি, সরকারী অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল যাতে অফিসের জরুরি কাজ চলমান থাকে। কিন্তু ঈদের আসল সময় ৫ জুন থেকে অফিস বন্ধ ছিল।
রাজধানীতে ঈদ শেষে যাত্রী চাপ ও সড়ক যোগাযোগের পরিস্থিত
ছুটির শেষে রাজধানীতে কর্মস্থলে ফেরার জন্য ব্যাপক জনস্রোত লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ঢাকার সড়কগুলোতে সকাল থেকেই যানজট শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকায় আসার জন্য ট্রেন ও লঞ্চেও প্রচুর যাত্রী দেখা গেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ সকালে যান চলাচল ও মানুষের চলাফেরা অনেক বেশি ছিল। বিশেষ করে ঢাকা-মহাসড়ক, গুলশান, মিরপুর, বসুন্ধরা, কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা গুলোতে যানজট দীর্ঘ সময় বিরাজ করছিল।
সরকারি কর্মচারীর সংখ্যা ও কাজের স্বাভাবিক চলাচল
বাংলাদেশে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখের কাছাকাছি। ঈদের দীর্ঘ ছুটি শেষে তাদের সকলের কর্মস্থলে ফেরার ফলে অফিসের কাজকর্ম স্বাভাবিক রূপে চলতে শুরু করেছে। এখন থেকে সরকারি বিভাগ ও দপ্তরগুলো নিয়মিত কাজ শুরু করবে।
সরকারি অফিস খোলা থাকায় নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সরকারি সেবাও দ্রুততম সময়ের মধ্যে পেতে সুবিধা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
ঈদের ছুটি দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক জীবনে প্রভাব
ঈদুল আজহার ছুটি দেশের অর্থনীতিতে সাময়িক ধীরগতি এনেছিল। সরকারি অফিস বন্ধ থাকায় নানান কাজ স্থগিত ছিল। তবে ছুটির সময় পুরো দেশ আনন্দ ও ধর্মীয় উৎসবে মগ্ন ছিল। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পেয়ে মানুষ মানসিক ভাবে প্রশান্তি পেয়েছে।
পরিবহন ও পর্যটন খাতেও ঈদ মৌসুমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। দেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ও গ্রামাঞ্চলে মানুষের যাতায়াত বেড়েছিল।
সরকারি ছুটির সিদ্ধান্ত ও পরবর্তী পরিকল্পনা
সরকার ঈদের ছুটির আগে কর্মীদের ও জনগণের সুবিধার কথা বিবেচনা করে ছুটির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এটি কর্মীদের পরিবার ও আত্মীয়দের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ দেয়।
এছাড়া সরকারি অফিস খোলা রাখার জন্য নির্দিষ্ট দিনগুলোতে জরুরি কাজ চালানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ছুটি ও অফিস সময় নির্ধারিত হবে।
সরকারি অফিস খোলা ও সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া
সরকারি অফিস খোলার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে সন্তোষ প্রকাশ পাওয়া যাচ্ছে। অনেকেই বলেছেন, অফিস খুলে যাওয়ায় বিভিন্ন সরকারি কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে এবং সাধারণ মানুষ সহজে সেবা পাবেন।
সরকারি কর্মচারীরা জানান, দীর্ঘদিন ছুটির পরে কর্মস্থলে ফিরে কাজে মনোযোগ দিতে ভালো লাগছে। তারা আশাবাদী আগামী দিনগুলোতে দেশের প্রশাসনিক কাজ দ্রুত এবং সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হবে।
বিশ্লেষক মতামত
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দীর্ঘ ছুটির পর অফিস খোলা গেলে দেশের প্রশাসনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আসবে। সরকারি কাজ দ্রুত সমাধান হবে এবং নাগরিক সেবা উন্নত হবে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ছুটি শেষে অফিস খোলার ফলে দেশের অর্থনীতিতে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক গতি ফিরে আসবে। সরকারি অফিস খোলা থাকলে বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক কাজ বাধাগ্রস্ত হবে না।
সার্বিক পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা
বর্তমানে দেশে ঈদুল আজহার ছুটি শেষ হওয়ায় সরকারি অফিস ও কর্মক্ষেত্র স্বাভাবিক রূপে চালু হয়েছে। যান চলাচল বেড়েছে এবং জনজীবন আগের মতো গতিশীল হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও সাধারণ মানুষ কাজের স্বাভাবিকতায় ফিরে এসেছে। দেশের প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আগামী দিনে আরও গতিশীল হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
- টানা ১০ দিনের সরকারি ছুটি শেষ, আজ থেকে অফিস খুলল
- ঈদুল আজহার ছুটি শেষে সরকারি অফিসে ফিরছেন কর্মচারীরা
- ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় যানজট ও যাত্রী চাপ বৃদ্ধি
- সরকারি অফিস খুলে দেশের প্রশাসনিক কাজ স্বাভাবিক হচ্ছে