অর্থনীতি

সাড়ে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের জিডিপি নিয়ে এশিয়ার নবম বৃহৎ অর্থনীতি এখন বাংলাদেশ

Advertisement

করোনা মহামারির প্রভাব কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশ এখন অর্থনীতির অগ্রগতির পথে। সম্প্রতি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রকাশিত ‘২০২৫ বেসিক স্ট্যাটিস্টিকস’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন এশিয়ার নবম বৃহৎ অর্থনীতি। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ভিত্তিতে তৈরি এই তালিকায় বাংলাদেশের জিডিপির পরিমাণ ৪৫০ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা প্রায় ৪৫ হাজার ৫০ কোটি ডলারের সমান

বাংলাদেশের অবস্থান—জাপান বাদ, চীন-ভারত শীর্ষে

এডিবির তালিকায় এশিয়ার শীর্ষ ৯টি অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে—
১. চীন
২. ভারত
৩. দক্ষিণ কোরিয়া
৪. ইন্দোনেশিয়া
৫. তাইওয়ান
৬. সিঙ্গাপুর
৭. থাইল্যান্ড
৮. ভিয়েতনাম
৯. বাংলাদেশ

তবে জাপানকে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। জাপান অন্তর্ভুক্ত হলে বাংলাদেশের অবস্থান একধাপ পিছিয়ে দশম হতো।

মূল্যস্ফীতি ও প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ

এডিবির হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ, যা এই তালিকার শীর্ষ ৯ দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারও ছিল তুলনামূলকভাবে কম—মাত্র ৪ দশমিক ২ শতাংশ, যেখানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ১ শতাংশ

মাথাপিছু আয় তুলনায় বেশি, তবে দারিদ্র্য এখনো বাস্তবতা

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২,৮৮০ ডলার, যা ভারতের (২,৫৪০ ডলার) চেয়ে বেশি হলেও শীর্ষ ৯ অর্থনীতির মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। এছাড়া ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে, যেখানে ভিয়েতনামে এই হার মাত্র ৩ দশমিক ৪ শতাংশ

চীন ও ভারত—এশিয়ার দুই প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি—দারিদ্র্যসীমা সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি, যা প্রতিবেদনটিতে উল্লেখযোগ্য বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ভিয়েতনামের সঙ্গে তুলনায় বাংলাদেশ কোথায়?

গার্মেন্টস রপ্তানিতে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামের জিডিপি বাংলাদেশ থেকে কিছুটা বেশি—৪৭৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। মূল্যস্ফীতি সেখানে মাত্র ৩ দশমিক ৬ শতাংশ এবং দেশের মানুষ তুলনামূলকভাবে অনেক কম দারিদ্র্যসীমার নিচে। এ ছাড়াও, ভিয়েতনাম প্রবৃদ্ধি, অবকাঠামো ও বিনিয়োগে এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুত।

বৈদেশিক ঋণ পরিস্থিতি

২০২৪ সালের শেষে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ৭১ দশমিক ১৯৫ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালের জাতীয় আয়ের (GNI) তুলনায় ১২ দশমিক ৬ শতাংশ

সাড়ে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির মালিক হওয়া নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য একটি গর্বের বিষয়। তবে মূল্যস্ফীতি, ধীর প্রবৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য এখনো বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে হলে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, রপ্তানি বহুমুখীকরণ এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে আরও জোর দিতে হবে।

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button