আঞ্চলিক

আড়াই ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল শুরু

Advertisement

 বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে আড়াই ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর অবশেষে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। যাত্রী দুর্ভোগের কথা ভেবেই শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।

ঘটনার বিস্তারিত

ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধের কারণে ঢাকাগামী জামালপুর কমিউটার ট্রেন ময়মনসিংহ স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল। একই সময়ে ময়মনসিংহগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসসহ আরও কয়েকটি ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে। দীর্ঘ সময় ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।

তবে শিক্ষার্থীরা বিকেল সাড়ে ছয়টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করলে আবার ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

শিক্ষার্থীদের অবস্থান

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা যৌক্তিক দাবি আদায়ের আন্দোলন করছিলেন। কিন্তু আন্দোলনের সময় কয়েক দফা হামলার শিকার হন তারা। এজন্য আন্দোলনের অংশ হিসেবে রেলপথ অবরোধে নামতে বাধ্য হন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, যাত্রীদের কষ্টের বিষয়টি বিবেচনা করেই তারা অবরোধ তুলে নিয়েছেন। পাশাপাশি সন্ধ্যার পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর আবারও হামলার আশঙ্কা রয়েছে। সেই কারণে বিকেলের পর আর অবরোধ চালিয়ে যাওয়া হয়নি।

যাত্রীদের ভোগান্তি

ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় হাজার হাজার যাত্রী ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টেশন ও ট্রেনের ভেতরে অপেক্ষা করতে বাধ্য হন। অনেক যাত্রী কর্মস্থলে ফিরতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে অফিসগামী ও জরুরি প্রয়োজনে ভ্রমণকারীদের দুর্ভোগ ছিল বেশি।

ঢাকামুখী কয়েকজন যাত্রী বলেন, তারা বিকেল থেকে স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কেউ সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারেননি, আবার কেউ গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট মিস করেছেন।

আন্দোলনের পেছনের কারণ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কয়েকদিন ধরে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন। তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতিতে বারবার শিক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়ছেন। এছাড়া আন্দোলনের সময় বহিরাগতদের হামলার ঘটনা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আহসানুল হক হিমেল বলেন, “আমরা ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করছি। কিন্তু আমাদের ওপর অন্যায়ভাবে হামলা চালানো হয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় শুধু যাত্রী নয়, রেল কর্তৃপক্ষও বিপাকে পড়ে। দীর্ঘ সময় ট্রেন আটকে থাকায় সময়সূচি ব্যাহত হয় এবং একাধিক ট্রেনের গন্তব্যে পৌঁছাতে বিলম্ব ঘটে। রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, ট্রেন চলাচল বন্ধ হলে শুধু যাত্রী নয়, পুরো নেটওয়ার্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

অন্যদিকে, যাত্রীরা দ্রুত সমস্যার সমাধান চেয়ে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, আন্দোলন আপাতত বন্ধ রাখা হলেও রাত ৯টার দিকে তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করবেন। একইসঙ্গে দাবি আদায় না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।


ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সোমবার বিকেল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আড়াই ঘণ্টা ভোগান্তির পর অবশেষে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিলে রেল যোগাযোগ আবার স্বাভাবিক হয়। এতে আটকে থাকা কয়েকটি ট্রেন চলাচল শুরু করে।

আড়াই ঘণ্টা ভোগান্তির পর ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এখনো চলমান। তাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে আবারও অবরোধ কিংবা অন্য কর্মসূচি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

এম আর এম – ১১৩২, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button