অর্থনীতি

পোশাক রপ্তানি বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করবে বিজিবিএ-বিজিএমইএ

বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি খাতের বিকাশ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ) ও বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফেকচারার্স এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। শনিবার (২২ মার্চ) রাজধানীর উত্তরা ক্লাবে বিজিবিএর ইফতার ও দোয়া মাহফিলে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে বিজিবিএর সদস্য, বিজিএমইএর নেতৃবৃন্দ এবং অন্যান্য ব্যবসায়িক সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্য

বিজিবিএর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে পোশাক রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিজিএমইএ এবং বিজিবিএর মধ্যে বিদ্যমান দূরত্ব কমিয়ে এনে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বক্তারা বলেন, পোশাক খাতে সুষ্ঠু বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখতে বিজিএমইএ, বিজিবিএ এবং বিকেএমইএকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে।

সংগঠনের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পোশাক শিল্পের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেন। এতে বক্তব্য রাখেন:

  • আবুল কালাম (চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএর আসন্ন নির্বাচনে সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার)
  • কফিল উদ্দিন (জেএফকে সোয়েটারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিএনপি নেতা)
  • কামাল উদ্দিন (টর্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক)
  • অনন্ত জলিল (এজিআই গ্রুপের চেয়ারম্যান ও চিত্রনায়ক)
  • মোফাজ্জল হোসেন পাভেল (বিজিএমইএর সভাপতি)
  • একেএম সাইফুর রহমান ফরহাদ (বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট)

চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম বলেন, “বিজিএমইএ ও বিজিবিএর বন্ধন যেন অটুট থাকে। দুটি সংগঠন একে অপরের পরিপূরক, তাই দেশের স্বার্থে ও ব্যবসায়ীদের উন্নতির জন্য আমাদের এক হয়ে কাজ করতে হবে।”

বায়িং হাউসের ভূমিকা ও ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা

জেএফকে সোয়েটারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কফিল উদ্দিন বলেন, “একসময় গার্মেন্টস মালিকরা বায়িং হাউসের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হতেন। কিন্তু বিজিবিএ সক্রিয় হওয়ার পর থেকে আমরা আরও আস্থার সঙ্গে বায়িং হাউসের সঙ্গে কাজ করতে পারছি। এই আস্থার সম্পর্ক ধরে রাখতে হবে।”

অনুষ্ঠানে অনন্ত জলিল বলেন, “পোশাক শিল্পে বিভিন্ন আন্দোলন চলছে। তবে এগুলোর যৌক্তিকতা বিবেচনা করা জরুরি। মুষ্টিমেয় কিছু লোকের জন্য বৃহৎ কোম্পানিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই ষড়যন্ত্রকারী ও হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।”

টেকসই বাণিজ্যের জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা

বিজিএমইএর সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন পাভেল বলেন, “টেকসই বাণিজ্যের জন্য বিজিবিএ ও বিজিএমইএর মধ্যে যে গ্যাপ রয়েছে, তা দূর করতে হবে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি অর্জন করা। এটি নিশ্চিত করতে হলে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।”

বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট একেএম সাইফুর রহমান ফরহাদ বলেন, “পোশাক খাতে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হচ্ছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। বায়িং হাউস সেক্টর হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে, তাই এই খাতের টেকসই উন্নয়নের জন্য উৎপাদনের সঠিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।”

বিজিবিএর নতুন উদ্যোগ: কার স্টিকার উন্মোচন

অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বিজিবিএর পক্ষ থেকে নতুন কার স্টিকার উন্মোচন করা হয়। এই স্টিকারের মাধ্যমে বায়িং হাউস ব্যবসায়ীরা বিমানবন্দরসহ সরকারি ও বাণিজ্যিক স্থাপনায় বিশেষ সুবিধা পাবেন।

উপসংহার

বাংলাদেশের পোশাক খাত বর্তমানে বৈশ্বিক বাজারে অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। এই খাতের আরও প্রসার ঘটাতে বিজিবিএ ও বিজিএমইএর মধ্যে সুসম্পর্ক এবং যৌথ উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button