ব্যবসা বাড়াতে ৪০০ কোটি টাকায় পোশাক কারখানা কিনল ডিবিএল গ্রুপ

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী ডিবিএল গ্রুপ ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ময়মনসিংহের ভালুকায় অবস্থিত গ্লোরি গ্রুপের গ্লোরি টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলস নামের পোশাক কারখানা ৪০০ কোটি টাকায় কিনে নিয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটির পর ডিবিএল গ্রুপের তত্ত্বাবধানে কারখানাটিতে নতুন করে উৎপাদন শুরু হবে।
কারখানার অবস্থা ও অধিগ্রহণের কারণ
গ্লোরি টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলসের ৩৬ বিঘা জমির ওপর গড়ে ওঠা এই প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কারণে রুগ্ণ হয়ে পড়ায় কর্তৃপক্ষ কারখানাটি বিক্রির উদ্যোগ নেয়। ডিবিএল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এম এ রহিম জানান, “গ্লোরি টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলস নিট কম্পোজিট কারখানা। এখানে ৩৬ লাইনের তৈরি পোশাক কারখানা, নিটিং, ডায়িং, প্রিন্টিং ও এমব্রয়ডারি ইউনিট রয়েছে।” তিনি আরও জানান, “রুগ্ণ হলেও পোশাক কারখানাটি সচল ছিল।”
উৎপাদন পরিকল্পনা
ডিবিএল গ্রুপের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অধিগ্রহণ করা কারখানা থেকে চলতি বছর ৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী বছর এই পরিমাণ ১০ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। বর্তমানে গ্লোরি টেক্সটাইলের অধীনে ১,১০০ কর্মী কাজ করতেন, এবং নতুন শ্রমিক নিয়োগের মাধ্যমে উৎপাদন চালু হলে কারখানার বিভিন্ন ইউনিটে প্রায় ৫,০০০ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে।
গ্লোরি টেক্সটাইলের সক্ষমতা
২০১৭ সালে গ্লোরি টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলস তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্যপদ পায়। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ৪ লাখ ৮০ হাজার বর্গফুট আয়তনের এই কারখানায় দিনে গড়ে ১ লাখ পিস পোশাক তৈরি করা যায়। এর বাইরে দিনে ২০ টন কাপড় নিটিং, ৪০ টন কাপড় ডায়িং এবং ৩৫ হাজার পিস প্রিন্টিংয়ের সক্ষমতা রয়েছে।
ডিবিএল গ্রুপের ইতিহাস
ডিবিএল গ্রুপের ব্যবসা শুরু হয়েছিল তিন দশক আগে যুক্তরাজ্যে তিন হাজার পিস পোলো শার্ট রপ্তানির মাধ্যমে। বর্তমানে তারা বাংলাদেশের পঞ্চম শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪৬ কোটি ১৭ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার ৫৮টি দেশে তাদের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ডিবিএল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এম এ রহিম বলেন, “চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তৈরি পোশাকের ভালো ক্রয়াদেশ আছে। ফলে আমাদের প্রত্যাশা, ডিবিএলের তৈরি পোশাক রপ্তানি চলতি অর্থবছর ৬০ কোটি ডলারের মাইলফলক ছাড়াবে।”
ডিবিএল গ্রুপের এই নতুন অধিগ্রহণ বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে তাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।