২২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সালমান এফ রহমান, তদন্তে দুদক

করোনাভাইরাস টিকা কেনার প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রের ২২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বেক্সিমকো ফার্মার ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগের বিবরণ:
দুদক সূত্রে জানা যায়, ভারত থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ টিকা আমদানির জন্য ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই টিকা আমদানিতে খরচ হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। অবশিষ্ট ২২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সালমান এফ রহমান ও তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।
দুদকের পদক্ষেপ:
এই অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু করেছে। প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, “কীভাবে এসব টাকা আত্মসাৎ হয়েছে এখনই বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। আমরা অনুসন্ধান শেষে বিস্তারিত জানাবো।”
প্রতিক্রিয়া:
এখন পর্যন্ত সালমান এফ রহমান এই অভিযোগের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে, এই অভিযোগ দেশের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক মহলে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
পূর্ববর্তী বিতর্ক:
উল্লেখ্য, এর আগেও সালমান এফ রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ তাদের ৩৫৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। তাদের বিরুদ্ধে প্লেসমেন্ট শেয়ার কারসাজি, প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডারদের অর্থ লোপাট, ব্যাংক ঋণ আত্মসাৎ এবং অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্য:
করোনা টিকা আমদানির সময় বেক্সিমকো ফার্মাকে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। সরকার সরাসরি সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা আমদানি করলে প্রতি ডোজে খরচ কমত এবং অতিরিক্ত ৬৮ লাখ টিকা কেনা সম্ভব হতো। বেক্সিমকো ফার্মা প্রতি ডোজ টিকায় ৭৭ টাকা লাভ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সামগ্রিক প্রেক্ষাপট:
এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে দেশের স্বাস্থ্য খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রশ্ন উঠবে। দুদকের এই পদক্ষেপ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের প্রতিফলন। আশা করা যায়, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটিত হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই ঘটনার আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।