ড্রোন প্রযুক্তিতে নতুন মাইলফলক, দেখলেন বিমানবাহিনীর প্রধান

বাংলাদেশ অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি একটি ড্রোনের রেপ্লিকা বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালমনিরহাট ক্যাম্পাসে এই ড্রোনের উড্ডয়ন অনুষ্ঠিত হয়।
ড্রোন উড্ডয়ন ও উপস্থাপনা
ড্রোন উড্ডয়নের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যারোস্পেস বিভাগের চেয়ারম্যান গ্রুপ ক্যাপ্টেন সাইফুর রহমান বকাউল ড্রোন নির্মাণ কার্যক্রমের বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব অ্যারোনটিকস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিকস (এআইএএ) ১৯৯৬ সাল থেকে প্রতিবছর ডিজাইন অ্যান্ড ফ্লাইয়ের (ডিবিএফ) ওপর বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে। এই প্রতিযোগিতা বিশ্বব্যাপী অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ
এ বছরের ৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে। তারা উদ্ভাবনী বিমানের নকশা, নির্মাণ ও উড্ডয়নের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। এই প্রতিযোগিতার জন্য একটি বিশেষ ড্রোনের নকশা করা হয়েছে, যা পে-লোডসহ অন্য একটি গ্লাইডারকে বহন করবে। গ্লাইডারটি কোনো নিজস্ব ইঞ্জিন ছাড়াই তার অ্যারোডাইনামিক বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে পরিচালিত হবে।
ড্রোনের ব্যবহার
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই ড্রোনটি স্বয়ংক্রিয় নজরদারি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কৃষি এবং অন্যান্য খাতে ব্যবহৃত হতে পারে। বাংলাদেশ অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা ও নতুন উদ্ভাবনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় দুটি প্রোটোটাইপ ড্রোন আবিষ্কার করেছে, যার ট্যাক্সি টেস্ট ও ফ্লাইট টেস্ট সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস
২০১৯ সালে বাংলাদেশ অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। এর স্থায়ী ক্যাম্পাস লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্র নগর ইউনিয়নের হাড়িভাঙ্গা বিমানবন্দর এলাকায় অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের বিমান ও মহাকাশ প্রযুক্তির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া
বিমানবাহিনীর প্রধানের উপস্থিতিতে ড্রোনের উড্ডয়ন দেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়নের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
এটি বাংলাদেশের অ্যারোস্পেস খাতে নতুন সম্ভাবনার সূচনা করবে এবং দেশের তরুণ প্রজন্মকে প্রযুক্তির দিকে আরও আগ্রহী করে তুলবে।