অর্থনীতি

নভেম্বরের ১২ দিনে এলো ১৩৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স

Advertisement

নভেম্বরের প্রথম ১২ দিনে দেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৪ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নভেম্বরের প্রথম ১২ দিনের রেমিট্যান্সের বিস্তারিত

বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রে জানা গেছে, ১২ দিনের হিসাব অনুযায়ী প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে প্রায় ১১ কোটি ২২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, ১২ নভেম্বর একদিনে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, “নভেম্বরের এই সময়ে রেমিট্যান্সের প্রবাহ গত বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এটি দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।“

গত বছরের তুলনায় বৃদ্ধি

গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৯৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার। অর্থাৎ, বছরের ব্যবধানে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে এসেছে ১,১৪৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা বছর ব্যবধানে ১৬.১০ শতাংশ বৃদ্ধি নির্দেশ করছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রবৃদ্ধি প্রবাসী কর্মীদের আয়ের বৃদ্ধির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে রেমিট্যান্সের সুদের হার ও অর্থ স্থানান্তরের সুবিধাজনক পদ্ধতির কারণে সম্ভব হয়েছে।

প্রবাসী আয় এবং অর্থনীতিতে প্রভাব

রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিতে একটি স্থিতিশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এই অর্থের মাধ্যমে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার যোগান বৃদ্ধি পায়, যা মুদ্রাস্ফীতি ও বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সাহায্য করে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, নভেম্বরের এই রেমিট্যান্স প্রবাহ দেশের ভোক্তা বাজারে ক্রয়ক্ষমতা বাড়াবে এবং বিভিন্ন খাতের বিনিয়োগে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে, গৃহনির্মাণ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতে এর প্রভাব স্পষ্টভাবে দেখা যাবে।

আগের মাসের তুলনা

গত মাসগুলোয় রেমিট্যান্সের প্রবাহও ছিল শক্তিশালী। অক্টোবর মাসে দেশে এসেছে ২৫৬ কোটি ৩৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং সেপ্টেম্বর মাসে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার। জুলাই ও আগস্ট মাসে যথাক্রমে ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ও ২৪২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

এর মাধ্যমে বোঝা যায়, প্রবাসীদের অবদান দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। এছাড়া, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১২ নভেম্বর পর্যন্ত মোট রেমিট্যান্স ১,১৪৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা দেশের ইতিহাসে কোনো নির্দিষ্ট সময়ে রেকর্ড হিসাবে ধরা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রবাসীদের রেমিট্যান্স বাড়ার মূল কারণ হলো বৈশ্বিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধি, এবং আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধার মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তরের সহজলভ্যতা।

একজন অর্থনীতিবিদ বলেন, “রেমিট্যান্স প্রবাহের বৃদ্ধি দেশের মুদ্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করছে। পাশাপাশি, এই অর্থ প্রবাসী পরিবারগুলোর জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”

ভবিষ্যতে প্রবণতা

বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারের পরিবর্তন, প্রবাসীদের আয় এবং বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব রেমিট্যান্সের ধারা নির্ধারণ করবে। তবে চলতি অর্থবছরে দেশের অর্থনীতির উপর প্রবাসী আয় ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

নভেম্বরের প্রথম ১২ দিনে ১৩৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছে। গত বছরের তুলনায় এই বৃদ্ধি দেশের ভোক্তা বাজার ও বিনিয়োগে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। প্রবাসীদের এই অবদান দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এম আর এম – ২২৩৩,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button