
গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি একজন স্নাইপারের গুলিতে ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছে। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ‘বন্দুকযুদ্ধের’ সময় এই ঘটনা ঘটে। ইসরাইলি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভি খবর প্রকাশ করেছে।
নিহত সৈন্যকে স্টাফ সার্জেন্ট চালাচেউ শিমন ডেমালাশ (২১) হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি নাহাল ব্রিগেডের ৯৩২তম ব্যাটালিয়নের সদস্য ছিলেন এবং দক্ষিণ ইসরাইল-অধিকৃত অঞ্চলের নেগেভ মরুভূমির বেয়ারশেবা শহরের বাসিন্দা ছিলেন।
ঘটনার প্রাথমিক বিবরণ
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, সৈনিক ডেমালাশ একটি গার্ড পোস্টে দায়িত্ব পালন করার সময় ফিলিস্তিনি স্নাইপারের গুলিতে বিদ্ধ হন। তার মৃত্যুর পর সামরিক কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহত সৈন্যকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়।
একই সময়, হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেড দক্ষিণ গাজা শহরের তেল আল-হাওয়া এলাকায় ইয়াসিন-১০৫ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে দুটি ইসরাইলি মেরকাভা যুদ্ধ ট্যাঙ্কে আঘাত হানার কথা ঘোষণা করে। এই হামলার সময়ে ট্যাঙ্ক ক্রুদের মধ্যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
গাজা উপত্যকা দীর্ঘদিন ধরেই ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু। দুই পক্ষের মধ্যে নিয়মিত সংঘর্ষ, রকেট আক্রমণ এবং জবাবী হামলার ঘটনা ঘটে আসছে। বিশেষ করে দক্ষিণ গাজার তেল আল-হাওয়া এলাকা যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত।
ইসরাইলি বাহিনী বলছে, সম্প্রতি গাজায় হামাসের বিভিন্ন গুপ্ত কর্মকাণ্ড এবং স্নাইপার হানার কারণে সৈন্যদের নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ইসরাইলি সামরিক কৌশল বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন, “ফিলিস্তিনি স্নাইপাররা কৌশলী ও উচ্চ প্রশিক্ষিত। তারা নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করে বড় ধরনের ক্ষতি করতে সক্ষম।”
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
নিহতের মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এলাকা জুড়ে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে। এছাড়াও, সামরিক অভিযান এবং নজরদারি তীব্র করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি পক্ষও তাদের হামলা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ঘোষণায় আসছে।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর এটির প্রভাব পড়বে।
বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ
রাজনৈতিক ও সামরিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, “ফিলিস্তিনি স্নাইপারদের আক্রমণ কৌশল ইসরাইলি সামরিক বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বাধ্য করছে। সামরিক ঘাঁটি ও গার্ড পোস্টে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে।”
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এই ধরনের সংঘর্ষ পর্যবেক্ষণ করছে। তারা বলছে, বেসামরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সীমান্তে শান্তি স্থাপনের জন্য উভয় পক্ষের সংযম প্রয়োজন।
পরবর্তী পরিস্থিতি
নিহতের মৃত্যুর পর সামরিক বাহিনী উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে। সামরিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরিস্থিতি মনিটর করছে।
উভয় পক্ষের সংঘর্ষ এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আরও ক্ষয়ক্ষতি এবং শান্তি আলোচনা ব্যাহত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য দুই পক্ষকেই সংযমী হওয়া প্রয়োজন।
এম আর এম – ১৫২৪,Signalbd.com